তনুশ্রী চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র।
বিশেষ ট্রেনে রেলকর্মীদের জন্য সংরক্ষিত কামরায় উঠে পড়েছিলেন এনআরএস হাসপাতালের এক নার্স। এ জন্য তাঁকে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে আরপিএফ-এর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, পরিচয়পত্র দেখালেও রেহাই মেলেনি বলে অভিযোগ। তাঁকে গ্রেফতার করে শিয়ালদহ আদালতে পেশ করা হয়েছিল। পরে জামিনে মুক্তি পান তিনি। বৃহস্পতিবার এ রকম অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হওয়ার পর শুক্রবার শিয়ালদহে আরপিএফ অফিস এবং স্বাস্থ্য দফতরে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
অভিযোগকারিণী তনুশ্রী চক্রবর্তী জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা নাগাদ তিনি বারুইপুর থেকে শিয়ালদহগামী বিশেষ ট্রেনে উঠেছিলেন। তাঁর বাড়ি বারুইপুর পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডে। অন্যান্য কামরাতে ভিড় থাকায় বাধ্য হয়ে রেল কর্মীদের জন্য সংরক্ষিত কামরাতেই উঠে পড়েন তিনি। সোনারপুর স্টেশনে ঢোকার আগে আরপিএফ-এর এক কর্মী তাঁকে হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ। পরিচয়পত্র দেখালেও সোনারপুর স্টেশনে তাঁকে মহিলা আরপিএফ কর্মীরা টেনে-হিঁচড়ে নামিয়ে আনেন বলে অভিযোগ। ওই স্বাস্থ্যকর্মীর স্বামী হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটে কর্মরত। অভিযোগ, তাঁর সঙ্গেও কথা বলতে দেওয়া হয়নি তনুশ্রীকে। পরে তাঁকে শিয়ালদহ আদালতে তোলা হয়। সেখানে ৭০০ টাকার বন্ডে জামিন পান তিনি। যদিও রেল সূত্রে খবর, রেলের কর্মীদের জন্য সংরক্ষিত কামরায় উঠে বচসায় জড়িয়েছিলেন তনুশ্রী। বিষয়টি হাতাহাতি পর্যায়ে পৌঁছে যায় বলেও অভিযোগ। খবর পেয়ে সোনারপুর থেকে আরপিএফ উঠে আটক করে তনুশ্রীকে।
জামিন পেয়ে এনআরএস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে গোটা ঘটনার কথা জানান। আরপিএফ কর্মীরা তাঁর পরিচয়পত্র কেড়ে নিয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন তনুশ্রী। তাঁর অভিযোগ, সোনারপুরে রেল পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে তাঁর অভিযোগ নেওয়া হয়নি। তবে শুক্রবার সকালে শিয়ালদহ আরপিএফ অফিসে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। স্বাস্থ্য দফতরকেও লিখিত ভাবে অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন। তাই এ নিয়ে আমি মন্তব্য করব না।’’
কোভিড মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের অনুরোধে লোকাল ট্রেন পরিষেবা বন্ধ করে রেল। তবে রেলকর্মীদের জন্য চলছিল বিশেষ ট্রেন। সেই ট্রেনে পুলিশ, স্বাস্থ্যকর্মীদের মতো জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্তদের উঠতে দেওয়ার জন্য রেলকে অনুরোধ করে রাজ্য সরকার। তার পর থেকেই ওই বিশেষ ট্রেনে উঠতে পারছেন স্বাস্থ্যকর্মী এবং পুলিশ। কিন্তু করোনা সংক্রমণের ভয়ে রেল কর্মীরা ট্রেনের প্রথম কামরা নিজেদের জন্য সংরক্ষিত রাখছেন। এবং সেখানে রেলকর্মী ছাড়া সাধারণভাবে কাউকে উঠতে দেওয়া হচ্ছে না। তনুশ্রী ওই কামরায় উঠে মহিলা রেলকর্মীদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়েছিলেন বলে অভিযোগ।