আশাকর্মী অপমানিত হয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন বলে পরিবারের অভিযোগ। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। —প্রতীকী চিত্র।
বাড়ির পিছনের কাঁঠাল গাছ থেকে উদ্ধার হল আশাকর্মীর ঝুলন্ত দেহ। সোমবার এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল বসিরহাটের স্বরূপনগরে। মৃতার পরিবার সূত্রে খবর, সম্প্রতি রাজ্য আবাস যোজনার সমীক্ষা করতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন তিনি। অপমানে আত্মঘাতী হয়েছেন রেবা বিশ্বাস রায় নামে বছর ৩৯-এর ওই বিধবা। রহস্যমৃত্যুর তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, রেবার স্বামী মারা যান প্রায় ২০ বছর আগে। তার পর থেকে বাপের বাড়িতেই থাকতেন তিনি। কয়েক বছর ধরে আশাকর্মী হিসাবে ওই গ্রামে নিযুক্ত হন। দু’দিন আগে আবাস যোজনার বাড়ির সমীক্ষা করতে গিয়ে কয়েক জন গ্রামবাসীর কাছে রেবা লাঞ্ছিত হন বলে অভিযোগ। রেবার পরিজনদের অভিযোগ, তাঁকে অশ্রাব্য গালিগালাজ করা হয়। সে দিন অপমানিত হয়ে বাড়ি ফিরে বোন অঞ্জলি এবং দাদা গোপালকে সব কিছু বলেছিলেন। প্রচণ্ড মানসিক চাপে ছিলেন রেবা। তার পরই স্বরূপনগর থানার শাড়া পুল ডাকবাংলো গ্রাম পঞ্চায়েতের এলাকার বাসিন্দা রেবার দেহ উদ্ধার হয়েছে।
মৃতার বোনের কথা, ‘‘আমার দাদা দিদিকে বলেছিল, তুই দরকার হলে বিডিওর কাছে গিয়ে চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে আয়।’’ এর পর তিনি জানান, রবিবার দুপুরে রেবা বাড়ি এসে বলেন, কর্মক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আর অন্য দিকে গ্রামবাসী, দুই তরফের চাপ আর সহ্য করতে পারছেন না। তিনি আত্মহত্যা করবেন। কিন্তু তা যে সত্যি হবে, কল্পনা করেননি বাড়ির কেউ। সোমবার সকালে বাড়ির পিছনের কাঁঠাল গাছে তাঁর ঝুলন্ত দেহ মেলে।
এই মৃত্যু নিয়ে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান অরুণ বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমাকেও বেশ কিছু দিন ধরে সমস্যার কথা জানিয়েছিল রেবা। আমি পুরো বিষয়টা ওর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরামর্শ দিয়েছিলাম। মেয়েটা চাপের কাছে নতিস্বীকার করে কেন যে আত্মহত্যা করল... বুঝতে পারছি না।’’
রেবার মৃত্যুতে পরোক্ষ ভাবে দায়ী যাঁরা, তাঁদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে পরিবার। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে স্বরূপ নগর থানার পুলিশ। বিডিও-র তরফেও তদন্ত চলছে।
উল্লেখ্য, রাজ্য আবাস যোজনার সমীক্ষা করতে গিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে সরকারি আধিকারিক থেকে আশাকর্মীদের। রেবার মৃত্যুর ঘটনায় ওই এলাকার আশাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।