বিক্ষোভ: জয়ন্তীপুর বাজারে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে পণ্য রফতানি বন্ধ করার দাবিতে এ বার সরব হলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রবিবার সকালে ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক যশোর রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পেট্রাপোল সীমান্তের কাছে জয়ন্তীপুর বাজার এলাকায় মহিলা-পুরুষেরা সকাল ৯টা থেকে অবরোধ শুরু করেন। বেঞ্চ পেতে রাস্তা আটকে দেওয়া হয়। আটকে পড়েন শুল্ক ও ল্যান্ড পোর্ট অথরিটির কর্মকর্তারা। রবিবার দুপুর পর্যন্ত পণ্য রফতানি হয়নি।
তিন ঘণ্টা অবরোধ চলার পরে বনগাঁর এসডিপিও অশেষবিক্রম দস্তিদার ঘটনাস্থলে যান। তিনি গ্রামবাসীর দাবি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন বলে আশ্বস্ত করেন। এরপরে অবরোধ ওঠে। ।
নানা জটিলতার পরে বৃহস্পতিবার পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য রফতানি ফের চালু হয়েছে। কিন্তু শুরু থেকেই বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। শনিবার রফতানি বন্ধ করার দাবি তুলে বিক্ষোভ দেখান লোডিং-আনলোডিংয়ের কাজে যুক্ত শ্রমিকেরা। একই দাবিতে উত্তর ২৪ পরগনা জেলাপরিষদের মেন্টর গোপাল শেঠ জেলাশাসককে চিঠি দেন।
বিক্ষোভকারীদের অনেকের বক্তব্য, সীমান্তের ও পারে বাংলাদেশের জেলাগুলিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছে। বেনাপোলের দিকেও ছড়িয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে পণ্য রফতানির কাজ চলতে থাকলে এ দিকেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। গ্রামবাসীদের দাবি, জিরো পয়েন্টে পণ্য খালাস করছেন বাংলাদেশি শ্রমিকেরা। বাংলাদেশি ক্লিয়ারিং এজেন্ট এবং ব্যবসায়ীরা জিরো পয়েন্টে আসছেন। তাঁদের উপযুক্ত সুরক্ষা নেই। বাংলাদেশিদের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। যে কারণে, কোনও ভাবেই তাঁরা পণ্য রফতানি হতে দেবেন না। পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গ্রামবাসীর আপত্তিতে এ দিন পণ্য রফতানি বন্ধ রয়েছে। পুলিশ প্রশাসন অবশ্য সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।’’
এ দিন স্থানীয় ছয়ঘড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান প্রসেনজিৎ ঘোষের কাছেও পণ্য রফতানি বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন গ্রামের মানুষ। প্রসেনজিৎ বলেন, ‘‘গ্রামবাসীরা মনে করছেন, সীমান্ত বাণিজ্য চালু থাকলে আমাদের এখানে করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাঁদের কথা মহকুমাশাসককে জানানো হয়েছে।’’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক রফতানি বন্ধ করার কথা না বললেও লকডাউন শুরুর পরে রাজ্যের এ ব্যাপারে আপত্তি ছিল। মূলত সংক্রমণ ছড়াতে পারে, এই যুক্তিতেই কোনও বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই বন্ধ করে দেওয়া হয় রফতানির কাজ। বিষয়টি ভাল চোখে দেখেনি কেন্দ্র। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ফের এক চিঠিতে রাজ্যকে নির্দেশ দেয়, অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের ট্রাক বাংলাদেশে পাঠাতে হবে।
এই পরিস্থিতিতে উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসেন। কী ভাবে সংক্রমণের আশঙ্কা কমিয়ে কাজ শুরু হতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা চলে। বৃহস্পতিবার থেকে জিরো পয়েন্টে কাজ শুরু হয়।