ধরপাকড়: গুদাম পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
রেশনের খাদ্যসামগ্রী কালোবাজারি নিয়ে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অভিযোগ উঠছে। এ বার হাবড়ায় একটি বেসরকারি গুদাম থেকে উদ্ধার হল ১৩৯ বস্তা খাদ্যসামগ্রী। বেআইনি মজুতের অভিযোগে পুলিশ দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনাচক্রে হাবড়া খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নির্বাচনী কেন্দ্র।
মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে হাবড়া শহরের জয়গাছি রথতলা এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে ধৃতদের নাম অরূপ বসু এবং অনুপ দে। রেশনের মালপত্র কী ভাবে বাইরে বেরিয়ে গেল, তা নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। জ্যোতিপ্রিয় বলেন, “পুলিশকে বলেছি, ওই দুর্নীতির সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের সকলকে খুঁজে বের করে গ্রেফতার করতে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে বেআইনি খাদ্যসামগ্রী মজুতের খবর পায় প্রশাসন। বিডিও, ফুড ইনস্পেক্টর ও থানার আইসি যৌথ ভাবে জয়গাছি রথতলা এলাকায় ওই গুদামে অভিযান চালান। পুলিশ জানিয়েছে, ওই এলাকার বাসিন্দা অনুপ দে ওরফে কানু নামে এক মুদি দোকানির একটি গুদাম রয়েছে। স্থানীয় চাল ব্যবসায়ী অরূপ বসুকে গুদামটি ভাড়ায় দিয়েছিল কানু। হাবড়া ১ এর বিডিও শুভ্র নন্দী বলেন, “উদ্ধার হওয়া চাল-আটা-গম সবই সরকারি রেশনের।” রাতেই পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করে গুদামটি সিল করে দিয়েছে।
পুলিশ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অনুপ ও অরূপ যৌথ ভাবে চাল-গমের কারবার করত। বাজেয়াপ্ত করা রেশনের খাদ্যসামগ্রী তারা কার কাছে পেল, তদন্ত করছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতেই হাবড়ার ফুড ইন্সপেক্টর অনুপ বিশ্বাস থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বুধবার ধৃতদের বারাসত জেলা আদালত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।
সিপিএমের হাবড়া এরিয়া কমিটির সম্পাদক আশুতোষ রায়চৌধুরী বলেন, “রাজ্যে রেশন বিলিতে অনিয়ম চলছে। রেশনের চাল তৃণমূলের কাছে চলে যাচ্ছে। এটা চুরি ছাড়া আর কী? নিরপেক্ষ তদন্ত হোক।” বিজেপি নেতা বিপ্লব হালদার বলেন, “রেশন দুর্নীতি নিয়ে আগেই আমরা অভিযোগ করেছিলাম। এ বার সেটা প্রমাণিত হল।” হাবড়ার তৃণমূল নেতা নীলিমেশ দাসের সাফাই, “খাদ্যসামগ্রী উদ্ধার এবং গ্রেফতারের ঘটনা প্রমাণ করছে মুখ্যমন্ত্রী ও খাদ্যমন্ত্রীর নির্দেশে প্রশাসন রেশন-দুর্নীতি রুখতে কতটা তৎপর।”