Hasnabad

ঘর হারিয়ে আশ্রয় ভ্যানের উপরে

বেসরকারি ভাবে কয়েকটি সংগঠন ত্রাণের চিঁড়ে, মুড়ি, রান্না করা খাবার, দিচ্ছে। তা সংগ্রহ করতে শুরু হয়েছে হুড়োহুড়ি।

Advertisement

নির্মল বসু

বসিরহাট শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২০ ০৬:০৮
Share:

এ ভাবেই বসবাস। নিজস্ব চিত্র

ফের একবার বাঁধ ভাঙায় ঘর ছেড়ে বড় রাস্তায় যন্ত্রচালিত ভ্যানরিকশার উপরে প্লাস্টিক টাঙিয়ে সংসার পেতেছেন নিতাই মণ্ডল ও তাঁর স্ত্রী গৌরী। ডাঁসা নদীর বাঁধ ফের ভাঙায় এমনই অবস্থা হয়েছে হাসনাবাদের খাঁপুকুর মণ্ডলপাড়ার বাসিন্দাদের।

Advertisement

বেসরকারি ভাবে কয়েকটি সংগঠন ত্রাণের চিঁড়ে, মুড়ি, রান্না করা খাবার, দিচ্ছে। তা সংগ্রহ করতে শুরু হয়েছে হুড়োহুড়ি। গৌরী বলেন, ‘‘আমরা দিনমজুরের কাজ করে কোনও রকমে এক বেলা আধপেটা খেয়ে কাটাই। আয়লার সময়ে সরকারি সাহায্য বলতে পঞ্চায়েত থেকে একটা পলিথিন জুটেছিল। এ বার এখনও পর্যন্ত সেটুকুও মেলেনি। তবে পঞ্চায়েত থেকে চিঁড়ে, গুড় দিয়েছে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কাছ থেকে একটা পলিথিন মিলেছে। তার নীচেই আমাদের দিন-রাত কাটছে।’’ নিতাই বলেন, ‘‘শুনছি সরকারি ভাবে প্রচুর খাবার আসছে গ্রামে। কিন্তু আমাদের মতো মানুষের হাতে তা পৌঁছচ্ছে না।’’

আমপানের রাতের অভিজ্ঞতা জানান নিতাই। তাঁর কথায়, ‘‘যখন সব ভেসে যাচ্ছিল, সে সময়ে ছেলে চিৎকার করে বলে, বাবা আমার গায়ে সাপ উঠেছে।’’ নিতাই বলেন, ‘‘ঝড়-জলের সময়ে ঘরের মধ্যে প্রথমে মাচায় উঠেছিলাম। ছেলের চিৎকারে মাচা থেকে নেমে দেখি, মস্ত বড় একটা ঢোড়া সাপ ছেলেটাকে পেঁচিয়ে রয়েছে। কোনও মতে সাপ সরিয়ে ছেলেকে নিয়ে উঠে পড়ি মাচায়।’’

Advertisement

গ্রামের বাসিন্দা নমিতা মণ্ডল জানালেন, বাঁধ ভেঙে স্রোতের মতো জল ঢোকায় ঘর থেকে কিছু বের করার সময় পাননি। তবে ওই পরিস্থিতির মধ্যেও দ্বাদশ শ্রেণির মেয়ের বই, খাতা এবং অ্যাডমিট কার্ড বুকে জড়িয়ে সামনের পাকা বাড়ির দিকে দৌড় দেন।

গ্রামের দুর্গত মানুষের কথায়, কংক্রিটের বাঁধ তৈরি না হলে এই দুর্গতি আবার হবে। সরকার ত্রাণের পাশাপাশি এ ব্যাপারে যেন নজর দেয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement