ভোগান্তি: প্রায় প্রতি বাড়িতেই নৌকো আছে এলাকায়। নিজস্ব চিত্র
মাস দু’য়েক ধরে এলাকা জলমগ্ন। বৃষ্টি না হলেও বেহাল নিকাশির কারণে জমা জল বের হচ্ছে না। জলবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন হাবড়া ১ ব্লকের মছলন্দপুর ১ পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতি বছরই বর্ষায় তাঁরা জলমগ্ন হয়ে পড়েন। জল শুকিয়ে যেতে কয়েক মাস সময় লেগে যায়।
উত্তর বেতপুল, শক্তিনগর, মাঠপাড়া, কুণ্ডুপাড়া-সহ বেশ কিছু এলাকার কয়েকশো পরিবার এখনও জলবন্দি। এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, রাস্তায় কোথাও হাঁটুজল, কোথাও কোমরসমান জল। বাসিন্দারা যাতায়াত করছেন নৌকোয় করে। প্রায় সব পরিবারেই একটি করে নৌকো আছে। অনেকে আবার জল ঠেলেই যাতায়াত করছেন। কিছু জায়গায় বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। তবে বৃদ্ধ, অসুস্থ মানুষদের পক্ষে ওই সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করা সম্ভব নয়। কয়েকটি বাড়িতে ঘরের মধ্যেও জল ঢুকে পড়েছে। ঘরে ইট পেতে রাখতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা।
স্থানীয় বাসিন্দা তারক মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রায় দু’মাস ধরে এই ভোগান্তি চলছে। নিকাশির কোনও ব্যবস্থা নেই। খাল সংস্কার হয় না। প্রতি বছরই একই সমস্যা। প্রশাসনকে বহুবার বিষয়টি জানানো হলেও পদক্ষেপ করা হয়নি।’’
জল জমে থাকায় সাপ, পোকামাকড়, ব্যাঙের উপদ্রব শুরু হয়েছে। ঘরের মধ্যে সাপ ঢুকে পড়ছে। অনেকের চর্মরোগ দেখা দিয়েছে। জলবন্দি থাকায় অনেকের কাজকর্ম বন্ধ হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা পেশায় ভ্যানচালক বাসুদেব হালদার বলেন, ‘‘জলের মধ্যে ভ্যান নিয়ে বের হতে পারছি না। পরিবারে চার জন সদস্য। রুজি-রোজগার বন্ধ। ইছামতী নদী ও পদ্মা খাল সংস্কার না হলে আমাদের সমস্যা মিটবে না।’’
বাসিন্দারা জানিয়েছেন পুজোর আনন্দ তাঁদের নেই। বাড়ির কচিকাঁচাদের নতুন পোশাকও হয়নি। পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী বলে, ‘‘নতুন জামা পরে তো আর জলের মধ্যে ঠাকুর দেখতে বেরোতে পারব না। তাই দূর থেকে ঢাকের আওয়াজ শুনেই পুজো কাটাব।’’ হাবড়া ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অজিত সাহা বলেন, ‘‘ওই এলাকায় জল জমার সমস্যা দীর্ঘদিনের। গত বছর থেকে সেচ দফতরের সহায়তায় সমাধানের চেষ্টা শুরু হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। নাংলা বিল, পদ্মা খাল হয়ে জল টিপি এলাকায় ইছামতীতে পড়ে। এই সমস্ত খাল-বিল সংস্কার করা হবে। আশা করছি আগামী বছর থেকে ওঁদের আর জলে ডুবতে হবে না।’’