ন্ধ থাকা নবাবগঞ্জের এই জেটির কাজ শুরু হতে চলেছে। নিজস্ব চিত্র
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পরে ফের শুরু হচ্ছে উত্তর ব্যারাকপুর এলাকার প্রাচীন নবাবগঞ্জ ফেরিঘাটের কাজ। সম্প্রতি ৩০ মিটার চওড়া ভাসমান জেটিতে ৩.৫ মিটার চওড়া একটি লোহার সেতু তৈরির কাজের জন্য বরাত দেওয়া হয়েছে।
ওই ফেরিঘাটে এত দিন কাঠের অস্থায়ী জেটি ছিল। বর্ষায় মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটত ছাউনিহীন জেটিতে। পর্যাপ্ত আলোরও ব্যবস্থা ছিল না। এই জেটি দিয়ে পারাপারকারীদের সমস্যার কথা কানে গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বছর তিনেক আগে তৎকালীন জেলাশাসক অন্তরা আচার্য মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ফেরিঘাট ঘুরে দেখেন। তখনই ঘাট সংস্কারের পাশাপাশি, স্থায়ী জেটি নির্মাণেরও পরিকল্পনা করা হয়। তখনকার মতো অস্থায়ী জেটিটির সংস্কার করা হয়। সেই সঙ্গে স্থায়ী জেটির প্রস্তাব অনুমোদন হয়ে কাজ শুরুও হয়। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই তা থমকে যায়। উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভা সূত্রের খবর, শুরু করেও কাজ ফেলেই চলে যায়
ঠিকাদার সংস্থা।
জেটির অসমাপ্ত কাজের বিষয়টি করোনা সংক্রমণের কারণে ধামাচাপা পড়ে গিয়েছিল। তবে বাসিন্দাদের দাবি ছিল, দ্রুত ফেরিঘাট চালু করতে হবে। প্রতিদিন ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত হুগলির সঙ্গে সংযোগ বজায় রাখত এই ঘাট। হাজারেরও বেশি যাত্রী নিত্যদিন পারাপার করতেন। জেটি বন্ধ থাকায় তাঁদের এখন অনেকটা ঘুরে শেওড়াফুলি ঘাট বা গারুলিয়া বাবুঘাট দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। সম্প্রতি জেলায় অনুষ্ঠিত প্রশাসনিক বৈঠকে বিষয়টি ওঠে। মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকেই পরিবহণ দফতরকে জেটির কাজ শুরু করতে সচেষ্ট হতে বলা হয়।
সম্প্রতি ফেরিঘাটটিতে যান উত্তর ব্যারাকপুরের পুর প্রশাসক মলয় ঘোষ-সহ আধিকারিকেরা। ছিলেন নতুন দায়িত্ব পাওয়া ঠিকাদার সংস্থার প্রতিনিধিরাও। জানা গিয়েছে, স্থায়ী জেটিটি ১০০ ফুট দৈর্ঘ্যের হবে। সেই জেটির জন্য ফের ৩ কোটি ৮১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে। মলয়বাবু বলেন, ‘‘জেটির চার দিকে এলইডি আলো লাগানো হবে। বয়স্ক যাত্রীদের সুরক্ষায় নজর দেওয়া হচ্ছে। নতুন জেটির পাশে ইতিমধ্যেই একটি বিশ্রামঘর এবং অতিথি নিবাসও খোলা হয়েছে। সেটি গাছ দিয়ে সাজানোর পরিকল্পনা রয়েছে।’’
নবাবগঞ্জ ফেরিঘাট থেকে কিছুটা দূরেই স্নানের ঘাট। গঙ্গা এখানে চওড়া হওয়ায় ইলিশের মরসুমে জেলেদের ভিড় জমে ঘাটে। কথিত আছে, পলাশির যুদ্ধের আগে এই ঘাটের কাছে জগৎ শেঠের বজরা ভিড়েছিল। ইতিহাস যা-ই থাক, বর্তমানকে রক্ষা করতে এ বার যেন কাজে কোনও ছেদ না পড়ে, মনেপ্রাণে চাইছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
নতুন ঠিকাদার সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, এখনও অনেকটা কাজ বাকি আছে। তবে ছ’মাসের মধ্যে জেটির কাজ শেষ করা যাবে বলেই আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আর পুরসভার দাবি, আগামী দুর্গাপুজোর আগেই ঘাট দিয়ে ফেরি চলাচল শুরু হবে।