বন্ধ: জুটমিল। ভাটপাড়ায়। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
বন্ধ হয়ে গেল ভাটপাড়ার রিলায়্যান্স জুটমিল। শ্রমিকদের অভিযোগ, মঙ্গলবার সকালে চটকল কর্তৃপক্ষ সকালের শিফ্টের শ্রমিকদের ভিতরে ঢুকতে দেননি। তাঁদের বলা হয়, কর্তৃপক্ষ আর ওই মিল চালাতে চান না।
আচমকাই চটকল বন্ধ হওয়ায় কর্মহীন হয়ে পড়লেন প্রায় সাড়ে চার হাজার শ্রমিক। অভিযোগ, বকেয়া গ্র্যাচুইটির দাবিতে গত কয়েক দিন ধরে চটকলের ভিতরে আন্দোলন করছিলেন ১৬৫ জন অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক। চটকল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, ওই আন্দোলনের জেরে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছিল। সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত। কিন্তু অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের আন্দোলনের জেরে কেন সাড়ে চার হাজার শ্রমিকের রুজি বন্ধ করা হল, সেই প্রশ্নের জবাব দেননি চটকল কর্তৃপক্ষ।
শ্রমিকেরা জানান, গত বছর অবসর নেন ওই ১৬৫ জন কর্মী। তারপরে প্রায় এক বছর পার হয়ে গিয়েছে। তাঁরা গ্র্যাচুইটির টাকা পাননি। আন্দোলনকারীদের দাবি, গত এক বছরে তাঁরা কারখানার কর্তৃপক্ষের কাছে ওই টাকা চেয়ে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু প্রাপ্য মেটানো হয়নি। ওই খাতে এক এক জনের আড়াই-তিন লক্ষ টাকা প্রাপ্য রয়েছে। বারবার আবেদন জানিয়ে কাজ না হওয়ায়, কারখানার ওই প্রাক্তন শ্রমিকেরা গত কয়েক দিন ধরে কারখানার মধ্যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন। কর্মরত শ্রমিকদের একটি বড় অংশ ওই আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছিলেন।
ওই কারখানার সকালের শিফ্টের শ্রমিক অশোক সাউ জানান, এ দিন কাজে গেলে কারখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, তাঁরা আর চটকল চালাতে চান না। কিন্তু লিখিত ভাবে সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিস কারখানার গেটে ঝোলানো হয়নি। শ্রমিকেরা জানান, কর্তৃপক্ষ নানা বাহানায় চটকল বন্ধ করে দিয়ে শ্রমিকদের চাপে রাখার চেষ্টা করে। যাতে তাঁরা আর কোনও দাবিদাওয়া নিয়ে সরব না হন। এ ক্ষেত্রেও কর্তৃপক্ষ সেই পথই নিয়েছেন চটকল কর্তৃপক্ষ। প্রাক্তন কর্মীদের আন্দোলনের জন্য কেন বর্তমান শ্রমিকদের পেটে লাথি মারা হল, সেই প্রশ্ন তুলেছেন কর্মচ্যুত শ্রমিকেরা। অবসরপ্রাপ্তদের আন্দোলন ভাঙতেই এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন শ্রমিকদের একাংশ। প্রশাসন জানিয়েছে, তারা কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে চটকল খোলার ব্যবস্থা করা হবে।