রায়চৌধুরী বাড়ির রথ নিজস্ব চিত্র।
আগে দালানে বসত নহবত। নবদ্বীপ থেকে আসতেন বৈষ্ণব সন্ন্যাসীরা। দূর-দূরান্তের মানুষের ভিড়ে জমে উঠত দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের ঐতিহ্যবাহী রায়চৌধুরী বাড়ির রথযাত্রা। ৩০০ বছর ধরে জমিদার বাড়ির রীতি মেনেই পালিত হয়ে আসছে রথযাত্রার অনুষ্ঠান। কিন্তু গত বছর থেকে করোনা অতিমারির কারণে বন্ধ রথযাত্রা। এ বারেও প্রশাসনিক নির্দেশ মেনে রথযাত্রা বন্ধ রাখছেন রায়চৌধুরী পরিবারের সদস্যরা৷ তবে মন্দিরে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার পুজোতে কোনও খামতি রাখা হচ্ছে না। পুজো দিতে গেলেও মানতে হচ্ছে করোনা বিধি। আগে রথ উপলক্ষে এলাকায় বিশাল মেলা বসত। কিন্তু এ বারে সব বন্ধ থাকায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
সোমবার সকাল থেকে রায়চৌধুরী বাড়ির মন্দিরের সামনে ভিড় জমাতে শুরু করেন বহু মানুষ। রথের অনুষ্ঠান বন্ধ থাকলেও প্রত্যেকে সামাজিক দূরত্ব মেনে পুজো দিয়ে বাড়ি ফিরছেন। রায়চৌধুরী বাড়ির বর্তমান কর্তা অমিয়কৃষ্ণ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘প্রাচীন রীতি মেনেই রথযাত্রা করি আমরা। কিন্তু করোনার কারণে গত বছর থেকে রথযাত্রা বন্ধ। এ বছরও বিশেষ সতর্কতা মেনে পুজোর আয়োজন করা হয়েছে।’’
জানা যায়, আজ থেকে প্রায় ৩০০ বছর আগে রাজবল্লভ চৌধুরী স্বপ্নাদেশে পেয়ে নিজের বাড়িতেই জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে রথযাত্রার সূচনা করেছিলেন। এক সময় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ও বেশ কিছুদিন এই বাড়িতেই এসে থেকেছিলেন। ‘দুর্গেশ নন্দিনী’ উপন্যাসের একটা বড় অংশ এই বাড়িতে বসে লেখা হয়েছিল বলেও কথিত আছে।