ঝঁুকির রেলযাত্রা। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।
প্ল্যাটফর্ম নিচু। যাত্রীদের ওঠানামা করতে গিয়ে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। গত ছ’মাসে ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে পা হড়কে মারা যান ৪ জন। জখম হন অনেকে।
একাধিকবার রেল কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়েও কোনও অবস্থার পরিবর্তন হয়নি বলে অভিযোগ যাত্রীদের। প্ল্যাটফর্ম সংস্কার-সহ বিভিন্ন দাবিতে মঙ্গলবার শ্যামনগর স্টেশনে রেল অবরোধের ডাক দিয়েছেন যাত্রীরা। এ প্রসঙ্গে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, ‘‘রেলের তরফ থেকে যাবতীয় পরিষেবার ব্যবস্থা শ্যামনগরে রয়েছে। অবরোধ করে কোনও সমস্যার সুরাহা হয় না। মঙ্গলবার অবরোধ হলে আমরা প্রশাসনের সাহায্য চাইব।’’
শুধু প্ল্যাটফর্ম নিচু নয়, এই স্টেশনে যাত্রী পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ রয়েছে অনেক। অথচ রেলের তরফে এক সময় মডেল স্টেশন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল শ্যামনগরকে। যাত্রীদের বসার পর্যাপ্ত জায়গা নেই। মাথার উপর ছাউনি নেই। পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। এমনকী সব ক’টি প্ল্যাটফর্মে শৌচাগারও নেই। তবে ট্রেনের কামরা থেকে প্ল্যাটফর্ম নীচু থাকার সমস্যাটাই সব থেকে বেশি বিপদের কারণ বলে অভিযোগ রেলযাত্রীদের। শ্যামনগর স্টেশনের গা ঘেঁষে দু’টি রেলগেট। রেললাইন বরাবর হকার্স কর্নার। প্ল্যাটফর্মেও হকারদের রমরমা ব্যবসা চলে।
সকালে অফিস ও স্কুলের সময়ে প্ল্যাটফর্মে মাত্রাতিরিক্ত ভিড় হয়। বেশির ভাগ দুর্ঘটনা ঘটে তখনই। স্থানীয় বাসিন্দা কংগ্রেস নেতা বিপুল ঘোষাল এবং প্যাসেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রদীপ চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা বহুবার রেলের কর্তাদের কাছে এ নিয়ে চিঠি দিয়েছি। রেলের তরফ থেকে প্রতিবারই দেখছি, দেখব বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি।’’
সন্ধ্যার পর থেকে এই স্টেশনের ৩ ও ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে নেশাখোরদের আড্ডা বসে। তেমনই ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মের বাইরে মোটরবাইক নিয়ে আড্ডা মারতে দেখা যায় যুবকদের। ফলে যাত্রীদের ঢুকতে এবং বেরোতে সমস্যা হয়। পর্যাপ্ত আলো নেই। গরম কালে পাখাও ঘোরে না।
রেল পুলিশের একটি আউট পোস্ট শ্যামনগর স্টেশনের ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে থাকলেও পুলিশের নাকের ডগাতেই নিয়ম ভেঙে কাজকর্ম চলে বলে অভিযোগ। ওভার ব্রিজ রয়েছে ঠিকই। কিন্তু কেউ ব্যবহার করেন না। এ ক্ষেত্রে প্রশাসনের নজরদারিও নেই বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা। সবকিছু মিলিয়েই অবরোধের ডাক দেওয়া হয়েছে।