ডায়মন্ড হারবার স্টেশনে যাত্রীবিক্ষোভ। — নিজস্ব চিত্র।
বুধবার সকাল থেকেই ডায়মন্ড হারবার স্টেশনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন রেলযাত্রীরা। যার জেরে বন্ধ ডায়মন্ড হারবার-শিয়ালদা শাখার ট্রেন চলাচল। বিক্ষোভকারীদের দাবি, নির্ধারিত সময়ের থেকে অনেক দেরিতে চলছে ট্রেন। এর ফলে অফিস বা গন্তব্যে পৌঁছতে দেরি হয়ে যাচ্ছে। স্টেশন কর্তৃপক্ষকে বার বার অসুবিধার কথা জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।
দিন দুয়েক আগে একই দাবিতে হাওড়ার টিকিয়াপাড়া স্টেশনে রেল অবরোধ করেছিলেন যাত্রীরা। এ বার সেই আঁচ এসে পড়ল শিয়ালদহের দক্ষিণ শাখার ডায়মন্ড হারবারে। রোজ সকালে ডায়মন্ড হারবার থেকে ট্রেনে করে বারুইপুরে কাজে আসেন সোমা মণ্ডল। তবে কোনও দিনই তিনি সময় মতো কাজের জায়গায় পৌঁছতে পারেন না বলে দাবি তাঁর। সোমার কথায়, ‘‘ট্রেনের সূচি দেখে স্টেশনে আসি। কিন্তু এসে দেখি, হয় স্টেশনে ট্রেন নেই, নয়তো দেরিতে ছাড়ছে।’’ এক-দু’দিন নয়, গত দু’-তিন মাস ধরে এই সমস্যায় ভুগছেন যাত্রীরা। কলকাতার এক বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত ব্যক্তির কথায়, ‘‘আমাদের কথা কানেই তুলছে না রেল। বার বার বলছি। কিন্তু রোজ স্টেশনে এসে দেখি একই ঘটনা। রেলের তরফ থেকে লিখিত ভাবে অভিযোগ চাইছে। আমরা দিয়েছি, তবে তার পরও কোনও সুরাহা মেলেনি।
বুধবার সকাল সাড়ে পাঁচটা থেকে ডায়মন্ড হারবার স্টেশনে অবরোধ করছেন যাত্রীরা। তাঁদের দাবি, যত ক্ষণ পর্যন্ত না রেল আধিকারিকেরা এসে সময় মতো ট্রেন চালানোর আশ্বাস দিচ্ছেন, তত ক্ষণ অবরোধ চলবে। অন্য দিকে, অবরোধ তুলে নেওয়ার জন্য রেলপুলিশের তরফে অনুরোধ করা হচ্ছে। দাবি না মানলে অবরোধ তোলার কোনও প্রশ্নই নেই বলে জানাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। এই অবরোধের জেরে ভোর থেকেই ওই লাইনে ট্রেন চলাচল ব্যাহত।
শিয়ালদহের দক্ষিণ শাখায় লোকাল ট্রেনের পরিষেবা নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ ছিল অনেক দিনের। বুধবার সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটল। যাত্রীদের দাবি, প্রতি দিনই কোনও না কোনও বিভ্রাট দেখা দেয়। প্রায়ই ট্রেন নির্ধারিত সময়ের অনেক ক্ষণ দেরিতে আসে। কখনও কখনও আবার ঘণ্টাখানেক দেরিতেও চলে ট্রেন। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন অফিসযাত্রীরা।
প্রসঙ্গত, সোমবার টিকিয়াপাড়া স্টেশনে সন্ধ্যায় অবরোধ করেছিলেন নিত্যযাত্রীরা। তিন ঘণ্টা টানা অবরোধ চলে। শেষে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আধিকারিকদের কাছ থেকে লিখিত আশ্বাস পাওয়ার পরেই সেই অবরোধ ওঠে। অবরোধের কারণে হাওড়া-খড়্গপুর শাখায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছিল।