পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের। মঙ্গলবার জয়নগরে। —নিজস্ব চিত্র।
নতুন করে উত্তেজনা ছড়াল জয়নগরে। মঙ্গলবার সকাল থেকে নির্যাতিতা নাবালিকার দেহ নিয়ে এলাকায় মিছিল করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছলে বিক্ষোভ দেখানো হয়। পুলিশের গাড়ি আটকে দেন স্থানীয়েরা। পুলিশের গাড়়িও ভাঙচুর করা হয়। পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি হচ্ছে, এমন খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছন বারুইপুরের এসডিপিও। তাঁকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখায় উত্তেজিত জনতা।
পরে বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। যখন শেষকৃত্যের কাজ চলছিল, তখন নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়। এক পুলিশকর্মী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন অন্য পুলিশকর্মীরা। সেই সময় ফের পুলিশের গাড়ি আটকানো হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে নির্যাতিতার বাড়িতে যান জয়নগরের তৃণমূল সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল। বিচার ব্যবস্থার উপরে ভরসা রেখে তিনি দোষীদের চরম শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান। প্রতিমা বলেন, “যার এখন পড়াশোনা করার কথা ছিল, তার গলায় মালা দিতে হচ্ছে। আমার বলার কিছু নেই। জনপ্রতিনিধি হিসাবে বলতে পারি, যে কোনও প্রয়োজনে আমি ওই পরিবারের পাশে রয়েছি।”
শুক্রবার রাতে জয়নগরে বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে জলাভূমি থেকে ন’বছরের শিশুর দেহ উদ্ধার করা হয়। রাতেই গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকেও। অভিযোগ, শিশুটিকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। শনিবার এই ঘটনার জেরে দিনভর উত্তপ্ত থেকেছে স্থানীয় এলাকা। পুলিশ ফাঁড়িতেও উত্তেজিত জনতা আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। অভিযোগ, শিশু নিখোঁজের অভিযোগকে প্রথমে গুরুত্ব দিতে চায়নি পুলিশ। বরং ওই শিশুর পরিবারকে থানা থেকে থানায় ঘোরানো হয়েছিল। রবিবারও দিনভর উত্তপ্ত ছিল স্থানীয় এলাকা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থানা ঘিরে বিক্ষোভ দেখায়।
সোমবার কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে নির্যাতিতার দেহের ময়নাতদন্ত হয়। পরে কল্যাণী থেকে দেহ পৌঁছয় গ্রামে। এর আগে ময়নাতদন্তের জন্য দেহ কাঁটাপুকুর মর্গে পাঠিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু রবিবারই হাই কোর্টে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয়। পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে পড়ে সেখানে। ধর্ষণের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন এই ঘটনায় পুলিশ পকসো আইনের কোনও ধারা যুক্ত করেনি, সেই প্রশ্ন তোলেন হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। আদালতে ভর্ৎসনা করা হয় রাজ্য সরকারকে।