জম্মু ও কাশ্মীরে চলছে ভোটগণনা। ছবি: পিটিআই।
গণনা সম্পূর্ণ হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, জয় পাওয়া কিংবা এগিয়ে থাকার নিরিখে ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি)-এর ঝুলিতে ৪২টি আসন। এনসি-র সঙ্গে জোট বেঁধে কংগ্রেস পেতে চলেছে ৬টি আসন। জয়ী হওয়া বা এগিয়ে থাকার নিরিখে বিজেপির ঝুলিতে ২৯টি আসন। পিডিপি মাত্র ৩টি আসনে জয়ী হয়েছে। সিপিএম এবং আপ একটি আসনে জয়ী হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীর পিপলস কনফারেন্স জয়ী একটি আসনে। আর নির্দল প্রার্থীরা ৭টি আসনে জয়ী হয়েছেন।
এনসি জয়ী পহেলগাম, হজরতবাল, লালচক, গান্ডেরবাল, বদগাম, গুলমার্গ, কোকেরনাগ, অনন্তনাগ পশ্চিম আসনে।
কংগ্রেস জয়ী বন্দিপোরা, অনন্তনাগ, রাজৌরি কেন্দ্রে।
বিজেপি জয়ী কাঠুয়া, জম্মু উত্তর, উধমপুর পূর্ব, জম্মু পশ্চিম, শ্রী মাতা বৈষ্ণোদেবী কেন্দ্রে।
ভোটের ফলে ইঙ্গিত, মূলত কাশ্মীর উপত্যকায় নিজেদের প্রভাব ধরে রেখেছে এনসি এবং কংগ্রেস। অন্য দিকে জম্মুতে সাফল্য পেয়েছে বিজেপি।
২০০৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এনসি পেয়েছিল ২৮টি আসন। কংগ্রেস জিতেছিল ১৭টি আসনে। আর পিডিপি জয় পেয়েছিল ২১টি আসনে। সে বার কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন ওমর। ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাস অবধি মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ওমর। সব কিছু ঠিক থাকলে ৯ বছর পরে ফের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসতে পারেন তিনি।
শ্রীনগরে ফারুক আবদুল্লার বাড়ির সামনে উচ্ছ্বাসে মাতলেন এনসি এবং কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকেরা।
গান্ডেরবাল এবং বদগাম। মধ্য কাশ্মীরের দুই আসনেই জয়ী হলেন এনসি নেতা ওমর আবদুল্লা।
রাজৌরি জেলার নওশেরা কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী সুরেন্দ্র কুমার চৌধরির কাছে পরাজিত হলেন জম্মু ও কাশ্মীরের বিজেপি সভাপতি রবীন্দ্র রায়না।
কুলগাম কেন্দ্রে জয়ী হলেন সিপিএম নেতা এমওয়াই তারিগামি। পঞ্চম বারের জন্য বিধায়ক হিসাবে নির্বাচিত হলেন তিনি। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নির্দল প্রার্থী সায়ার আহমেদ রেশিকে ৭৮০০-রও বেশি ভোটে পরাজিত করেছেন তিনি।
২০১৪ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ২৮টি আসন পেয়ে একক বৃহত্তম দল হয়েছিল পিডিপি। ১০ বছর পরে মেহবুবার দল মাত্র তিনটি আসনে এগিয়ে। পরাজিত হয়েছেন মুফতি-কন্যা ইলতিজাও। তবে দলের ফলাফল প্রসঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা জানান তাঁর দল কঠিন লড়াই দিয়েছে। তাঁর কথায়, “কোন দল কাশ্মীরে এনসির বিরুদ্ধে লড়াই করছে? এক মাত্র পিডিপি। আমাদের আসন সংখ্যা কম হতে পারে। কিন্তু আমাদের শক্তিকে কেউ অস্বীকার করতে পারবে না।”
এনসি-কংগ্রেস জোটের জয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পর ওমর আবদুল্লা বিজেপিকে নিশানা করে বলেন, “আমরা আবার কাশ্মীরের মানুষকে সেবা করার সুযোগ পেলাম। গত পাঁচ বছরে এনসিকে শেষ করার বহু চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু ঈশ্বরের আশীর্বাদে যাঁরা আমাদের মুছে দিতে এসেছেন, তাঁরা নিজেরাই মুছে গিয়েছেন।
জম্মু ও কাশ্মীরে খাতা খুলল অরবিন্দ কেজরীওয়ালের দল আম আদমি পার্টি (আপ)। ডোডা বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ী হয়েছেন আপের প্রার্থী মেহরাজ মালিক। তিনি তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী, বিজেপি প্রার্থী গজয় সিংহ রানাকে প্রায় পাঁচ হাজার ভোটে পরাজিত করেছেন।
জম্মু ও কাশ্মীরের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হবেন পুত্র ওমর আবদুল্লা। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এমনটা জানালেন এনসি নেতা ফারুক আবদুল্লা।
এখনও পূর্ণাঙ্গ ফলপ্রকাশ হয়নি। তবে তার আগেই পরাজয় স্বীকার করে নিলেন গণনার গোড়া থেকেই পিছিয়ে থাকা মেহবুবা মুফতির কন্যা ইলতিজা মুফতি।
জম্মু ও কাশ্মীরের কুলগাম কেন্দ্রে এগিয়ে সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ ইউসুফ তারিগামি। প্রসঙ্গত, সিপিএম এনসি-কংগ্রেস জোটের অন্যতম শরিক।
এখনও পর্যন্ত এনসি-কংগ্রেস জোটের ঝুলিতে ৩৮ শতাংশ ভোট। বিজেপি পেয়েছে ২৬.৭২ শতাংশ ভোট। পিডিপি পেয়েছে ৭.৮৯ শতাংশ ভোট। অন্য দলগুলির মোট ভোট শতাংশ ২৭।
চলছে ভোটগণনা। জয়ের ইঙ্গিত পেতেই একে অপরকে মিষ্টিমুখ করাচ্ছেন কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকেরা। ছবি: পিটিআই।
জম্মু ও কাশ্মীরে এখনও পর্যন্ত ছ’টি আসনে এগিয়ে নির্দল প্রার্থীরা। জম্মু ও কাশ্মীর পিপলস কনফারেন্স (জেকেপিসি) দু’টি আসনে এগিয়ে। এখনও পর্যন্ত কোনও আসনে এগিয়ে নেই বারামুলার সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার রশিদের আওয়ামি ইত্তেহাদ পার্টি (এআইপি)।
গান্ডেরবাল এবং বদগাম, দু’টি আসনেই এগিয়ে রয়েছেন এনসি নেতা তথা জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। শ্রীগুফওয়াড়া-বিজবেহড়া আসনে পিছিয়ে পিডিপি নেত্রী তথা মেহবুবা মুফতির কন্যা ইলতিজা মুফতি।
জম্মু ও কাশ্মীরের গত বিধানসভা নির্বাচনে একক বৃহত্তম দল হয়েছিল মেহবুবা মুফতির পিডিপি। পরে বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে সরকারও গঠন করে তারা। প্রথমে মুখ্যমন্ত্রী হন মেহবুবার পিতা মুফতি মহম্মদ সইদ। পরে তাঁর মৃত্যুর পর মুখ্যমন্ত্রী হন কন্যা মেহবুবা। গত লোকসভা নির্বাচনে একলা লড়ে একটি আসনেও জেতেনি পিডিপি। অনন্তনাগ-রাজৌরি লোকসভা কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে হেরে যান মেহবুবা। বিধানসভা ভোটের প্রাথমিক ফল বলছে, মাত্র ৫টি আসনে এগিয়ে রয়েছে মুফতির দল। তবে কোনও দল বা জোট সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যা না পেলে ‘কিংমেকার’ হয়ে উঠতে পারে পিডিপি।
ক্রমশ আসন বৃদ্ধি পাচ্ছে এনসি-কংগ্রেস জোটের। তবে খুব পিছিয়ে নেই বিজেপিও। আপাতত এনসি-কংগ্রেস এগিয়ে রয়েছে ৪৫টি আসনে। এর মধ্যে এনসি এগিয়ে ৩৬টি আসনে আর কংগ্রেস এগিয়ে ১৩টি আসনে। অন্য দিকে, বিজেপি এগিয়ে ২৭টি আসনে।
ভোটগণনা চলছে জম্মু ও কাশ্মীরে। প্রাথমিক গণনায় অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে এনসি-কংগ্রেস জোট। একটু পিছনে বিজেপি। মেহবুবার দল পিডিপি এগিয়ে তিনটি আসনে। অন্যান্যরা এগিয়ে দু’টি আসনে।
কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের পর প্রথম বিধানসভা ভোট হল সেখানে। ২০১৯ সালের অগস্টে অধ্যাদেশ জারি করে কেন্দ্র কাশ্মীরের অনুচ্ছেদ ৩৭০ প্রত্যাহার করে। রাজ্যের তকমা হারায় কাশ্মীর। সাবেক জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্য ভেঙে হয় দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখ এবং জম্মু ও কাশ্মীর। তার পর দীর্ঘ দিন সেখানে নির্বাচিত সরকার ছিল না। সুপ্রিম কোর্ট সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিধানসভা নির্বাচন করানোর জন্য কেন্দ্রকে নির্দেশ দেয়। নতুন সরকার তৈরি হওয়ার পর জম্মু ও কাশ্মীরের উপরাজ্যপালের ভূমিকা কী হবে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে রাজ্য মন্ত্রিসভার স্বাধীনতা কতটা থাকবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।