টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ। শনিবার গাইঘাটায় যশোর রোডে। নিজস্ব চিত্র ।
আবেদনের ভিত্তিতে নয়, নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবিতে বনগাঁ লোকসভা এলাকায় ক্রমশ জোরদার হচ্ছে মতুয়াদের আন্দোলন। শুক্রবার সিএএ বাতিল এবং নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবিতে ঠাকুরনগরে মিছিল করে অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘ। নেতৃত্ব দেন অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি তথা তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতা ঠাকুর। শনিবার সকালে মতুয়া ভক্তেরা গাইঘাটার থানার সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ পালন করেন। টায়ার জ্বালিয়ে যশোর রোড অবরোধ করা হয়। বিক্ষোভ দেখানো হয় শ্রীশ্রী শান্তিহরি-গুরুচাঁদ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে। প্রায় আধ ঘণ্টা অবরোধ চলে।
বিক্ষোভকারীদের পক্ষে সুকেশ চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা আবেদনের ভিত্তিতে নয়, নিঃশর্ত নাগরিকত্ব চাই। কিন্তু সিএএ আইনে যে সব শর্ত আছে, তাতে মতুয়া সহ দেশভাগের বলি হয়ে এ দেশে আসা উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব পাওয়া সম্ভব নয়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমরা মূল ভারতের মানুষ। সিএএ আইনের যে ৩৯ পাতার নোটিফিকেশন জারি হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আসা উদ্বাস্তুদের সে দেশের পাসপোর্ট, জন্মের শংসাপত্র, জমির দলিল বা পড়াশোনার নথি জমা দিতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকার আইন করেছে এক রকম, আর মুখে বলছে অন্য কথা।’’ তাঁর কথায়, ‘‘মতুয়াদের সঙ্গে দ্বিচারিতা করা হচ্ছে। কেন্দ্র আমাদের চরম বিপদের মধ্যে ফেলতে চাইছে।’’
এ দিন বিকেলে বনগাঁ শহরে ১ নম্বর রেলগেট এলাকাতেও মতুয়ারা যশোর রোড অবরোধ করে নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান।
বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, তৃণমূল কিছু মতুয়াকে ভুল বুঝিয়ে পথে নামাচ্ছে। এতে কোনও রাজনৈতিক লাভ তারা পাবে না। মতুয়াদের জোড়া কর্মসূচির বিষয়ে বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘‘সিএএ আইনে মতুয়া উদ্বাস্তু মানুষের নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা আছে। কোনও শর্ত নেই। তৃণমূল এঁদের ভুল বোঝাচ্ছে। আমার সন্দেহ আছে, এঁরা আদৌ মতুয়া কি না! কারণ মতুয়ারা সকলে বিজেপির সঙ্গেই আছেন।’’
অন্য দিকে, তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘মতুয়ারা নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবিতে পথে নেমে আন্দোলন করছেন। তাঁরা বুঝতে পেরেছেন, বিজেপি তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়ার নামে ভাঁওতা দিয়ে এসেছে। সে কারণে তাঁদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গিয়েছে।’’