ফাইল চিত্র।
বাজারে গেলে আজকাল আর ছ্যাঁকা লাগে না মধ্যবিত্ত বাঙালির। পুজোর অনেক আগে থেকে আনাজের ধারাবাহিক মূল্য বৃদ্ধি সয়ে গিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু পুজোর মরসুমে আনাজের দাম মধ্যবিত্তের নাগাল ছাড়িয়েছে। কাঁচা লঙ্কা অনেক দিন আগেই ডবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিল। সে কিছুটা নাগালে আসার আগেই টি-টোয়েন্টির ঢঙে চালিয়ে খেলে সেঞ্চুরি হাঁকানোর পথে পেঁয়াজও। গ্রীষ্মের আনাজের মেয়াদ ফুরোতে চলল। আবার শীতের আনাজও বাজারে আসেনি সে ভাবে। অভিযোগ, জোগানের অভাবের সুযোগে ফড়েদের কালোবাজারি মধ্যবিত্তদের নাগাল এড়াচ্ছে আনাজ। পেঁপে, মিষ্টি কুমড়োর দামও আজ আকাশছোঁয়া। যে ডিম নিম্নবিত্তদের পুষ্টি জুগিয়ে আসছে বছরের পর বছর, তার মূল্যও আজ আকাশছোঁয়া। পুরো উত্তর ২৪ পরগনা জুড়ে দামের ছবিটা কার্যত একই। কোনও বাজারে কুমড়োর দাম ৫০ ছুঁয়েছে। ফলে ভাত-রুটির পাতে সামান্য আনাজটুকু জোগাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে বাড়ির কর্তাদের। এরই মধ্যে কিছুটা উল্টো ছবি ধরা পড়েছে বনগাঁয়। সেখানে কিছুটা হলেও দাম কম আনাজের। বসিরহাট শহরে নতুন বাজার, ভ্যাবলা বাজার, মাসের বাজার, পুরাতন বাজার, কলেজ বাজার, বদরতলা বাজার-সহ সব বাজারেই আনাজের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। সর্বত্রই পেঁয়াজ ৯০ টাকা কেজি। পটল ৪৫ টাকা। উচ্ছে ৬০ টাকা। পেশায় গৃহশিক্ষক সুকমল বিশ্বাস বাজারে গিয়েছিলেন এক জোড়া কাঁচকলা কিনবেন বলে। জোড়া ২৪ টাকা শুনে হাঁটা দেন তিনি। ঢেঁড়শ-পটল বাজারে অপ্রতুল। ফলে তার দামও ৫০ টাকার আশপাশে। বসিরহাটে টোম্যাটো ১০০ টাকা ছুঁয়েছে। ক্রেতাদের সব থেকে ধাক্কা খেতে হচ্ছে মিষ্টি কুমড়োর দাম শুনে। তার দামও ৫০ ছুঁয়েছে। বসিরহাট-হিঙ্গলগঞ্জ-হাসনাবাদ সর্বত্রই দাম কার্যত এক। কাঁচা লঙ্কা কিছুটা কমে আপাতত ১৫০ টাকায় থিতু হয়েছে। হাসনাবাদের বিভিন্ন বাজারে একটা ডিম খুচরো কিনতে গেলে সাড়ে ছ’টাকা-সাত টাকা পড়ছে। একটা রুগ্ন ফুলকপিও ৮০-৯০ টাকায় বিকোচ্ছে। খাসির মাংস ৭০০ টাকা। দামের প্রায় একই ছবি ব্যারাকপুরের বিভিন্ন বাজারে। কোনও কোনও বাজারে আলু ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজের দাম ১০০। বাঁধা কপি ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে মুরগির মাংসের দাম দু’শোর নীচেই রয়েছে। বনগাঁ মহকুমায় কিছু কিছু আনাজের মূল্য গত মাসের তুলনায় কিছুটা কমেছে। আবার কয়েক ধরনের আনাজের দাম সামান্য হলেও বেড়েছে। এখানকার বিভিন্ন বাজারে কাঁচা লঙ্কার দাম আপাতত ১০০ টাকা কেজি। এক মাস আগে কাঁচ কলার কেজি প্রতি দাম ছিল ৭০ টাকা। শুক্রবার তার দাম ৩৫ টাকায় নেমেছে। টোম্যাটোর দামেও কিছুটা স্বস্তি মিলেছে। এ দিন বনগাঁর বিভিন্ন বাজারে ৬০ টাকা কিলো দরে তা বিক্রি হচ্ছে। মুলোর দাম কিছুটা কমে এখন কেজি প্রতি ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জেলার মধ্যে বনগাঁ মহকুমায় ভাল আনাজ চাষ হয়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমানে স্থানীয় এলাকার শীতের আনাজ উঠতে শুরু করেছে। ট্রেন বন্ধ থাকায় ছোট কারবারিরা তা কলকাতার বাজারে নিয়ে যেতে পারছেন না। ফলে স্থানীয় বাজারে জোগান বেড়েছে। দাম কিছুটা নাগালের মধ্যে রয়েছে।