সংবাদমাধ্যমের কর্মী শুনেই চায়ের কাপ ফেলার অছিলায় বোড়াল রাজনারায়ণ স্কুলের একটি বুথ থেকে বাইরে বেরিয়ে এলেন প্রিজাইডিং অফিসার। কানের কাছে মুখ এনে বললেন, ‘‘ভোট কেমন হচ্ছে, তা তো বুঝতেই পারছেন। আমাদেরও তো পরিবার আছে, প্রাণের ভয় আছে। মুখ বুজে সহ্য করতে হচ্ছে।’’
সকাল এগারোটার পর থেকে নির্যাসে এটাই ছিল রাজপুর-সোনারপুর, বারুইপুর কিংবা বজবজ পুরসভার ভোটচিত্র। সিপিএমের এক পোলিং এজেন্টের কথায়, ‘‘সকাল এগারোটা অবধি ঠেকিয়ে রাখতে পেরেছিলাম। তার পরে যে ভাবে বাহিনী ঢুকতে শুরু করল, তাতে মুখ বুজে থাকা ছাড়া উপায় রইল না। প্রতিবাদ করলে রক্তগঙ্গা বইত।’’ বস্তুত তাই। কলকাতা মডেলে সকাল ১১টা পর এই ভাবেই পুরভোটে শাসক দলের ‘সুষ্ঠু ও অবাধ’ দাপট দেখল দক্ষিণ ২৪ পরগনার তিন পুরসভা। যেখানে প্রতিবাদ হল, সেখানেই এজেন্টদের বের করে দেওয়া হল। হেনস্থা হলেন বিরোধী প্রার্থীরাও।
তবে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ সকাল থেকে আসতে শুরু করলেও মোটের উপর বারুইপুর, বজবজ এবং রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ভোট ছিল শান্তিপূর্ণই। এমনকী, বিরোধীদের তরফেও তেমন কোনও অভিযোগ ওঠেনি। সকাল সাড়ে ১০টায় মহেশতলা পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সন্তোষপুর পাবলিক হাই মাদ্রাসা থেকে মায়ের সঙ্গে ভোট দিয়ে ফিরছিলেন শর্মিলা খাতুন। এ বারই প্রথম ভোট তাঁর। কেমন লাগল, প্রথম ভোট? মুচকি হেসে তিনি বলেন, ‘‘ভোট দিতে ভালো লাগছে। কিন্তু ভোট দিয়ে কী হবে। তা বুঝতে পারি না।’’ চার নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শিক্ষিকা তনিমা সরকার কলকাতা পুরসভার নির্বাচন দেখে কিছুটা আতঙ্কে ছিলেন। কিন্তু এ দিন বাড়ির পাশের বুথে ভোট দিলেন। ভোট কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে ওই শিক্ষিকা বলেন, ‘‘এখানে কিন্তু আতঙ্কের পরিবেশ নেই। বুথে লম্বা লাইন রয়েছে।’’