চলছে গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র।
আগামী জানুয়ারিতেই গঙ্গাসাগর মেলা। করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই আগেভাগে মেলার প্রস্তুতি শুরু করেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যেই সাগরদ্বীপে কপিলমুনি মন্দির চত্বরে জোর কদমে শুরু হয়েছে কাজ। মন্দিরে লেগেছে নতুন রঙের ছোঁয়া। মন্দিরের কিছু অংশ সংস্কারও করা হচ্ছে। পাশাপাশি, স্বাস্থ্যবিধির উপর কড়া নজরদারি চলবে আগামী বছরের গঙ্গাসাগর মেলায়।
ইতিমধ্যেই মুড়িগঙ্গা নদীতে ড্রেজিং করে পলি তোলার কাজ শুরু করেছে সেচ দপ্তর। মন্দিরের সামনে ড্রেনেজ সিস্টেমের সমস্যা থাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাকা ড্রেন তৈরি করা হয়েছে। আমফান ঝড়ের তাণ্ডবে মন্দিরের রাস্তার দু’ধারের ভেঙে পড়া ল্যাম্পপোস্টের বদলে লাগানো হচ্ছে ত্রিফলা বাতি। এই কাজ করছে ‘গঙ্গাসাগর বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ’। জেলাশাসক পি উলগানাথন নিয়মিত ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে এসডিও, বিডিও এবং পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের সঙ্গে মেলা নিয়ে বৈঠক করছেন।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, মেলা নিয়ে নবান্নের গ্রিন সিগন্যাল পাওয়ার পরই কারিগরী দফতর, পূর্ত দফতর, সেচ দফতর, বিদ্যুৎ দফতর এবং স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক সেরেছে জেলা প্রশাসন। এবার ই-স্নানের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ই-স্নানের পাশাপাশি ই-প্রসাদ এবং ই-দর্শনের মাধ্যমে বাড়িতে বসেই মেলায় অংশ নিতে পারবেন তীর্থযাত্রীরা। এর জন্য জেলা প্রশাসনের তরফে একটি ওয়েবসাইটও চালু করা হচ্ছে। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে স্নানের জল এবং কপিলমুনির প্রসাদ বুকিং করা যাবে।
তবে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে স্বাস্থ্যবিধির উপর। বাসে ওঠার আগে তীর্থযাত্রীদের মেডিক্যাল স্ক্যানার ও থার্মাল গানের মাধ্যমে দেহের উষ্ণতা মাপা হবে। গঙ্গাসাগর পৌঁছতে যে জেটিগুলি ব্যবহৃত হয়, প্রত্যেকটিতে লাগানো হবে স্যানিটাইজার টানেল। মেলার প্রত্যেকটি প্রবেশ পথেও টানেল বসবে। বিনামূল্যে মাস্কও বিলি করা হবে। মেলার মধ্যে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট এবং আরটিপিসিআর টেস্টেরও ব্যবস্থা রাখা হবে।
আরও পড়ুন: ওঠেনি পর্যাপ্ত ইলিশ, সামনের বছর মাছ ধরা নিয়ে সংশয়ে ট্রলার মালিকরা
মেলা প্রাঙ্গণেই গড়ে তোলা হচ্ছে সিসিইউ পরিষেবাযুক্ত একটি অস্থায়ী হাসপাতাল। কোনও যাত্রী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁদের অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য ওয়াটার অ্যাম্বুল্যান্স এবং এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স রাখা থাকবে। এ বিষয়ে ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস রায় বলেছেন, ‘‘এ বারের গঙ্গাসাগর মেলায় তীর্থযাত্রীদের কড়া স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মেলা চলাকালীন মোট ৭টি সেফ হোম খোলা থাকবে তীর্থযাত্রীদের জন্য।’’