সতর্কতা: মৈপিঠ কোস্টাল থানা এলাকায় প্রচার পুলিশের। নিজস্ব চিত্র।
ফের দুর্যোগের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে রাজ্যে। আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে একটি গভীর নিম্নচাপ ও ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হওয়ায় রবিবার থেকে একাধিক জেলায় ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে প্রবল বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। তবে সাইক্লোন তৈরি হওয়ার আশঙ্কা নেই বলেই প্রশাসন সূত্রের খবর। যদিও দুই ২৪ পরগনার উপকূল এলাকায় প্রবল জলোচ্ছ্বাস তৈরি হতে পারে। ফলে আরও একবার বিপর্যস্ত হতে পারে উপকূল এলাকার জনজীবন। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, সোমবার ও মঙ্গলবার নাগাদ আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হবে পূর্ব-মধ্য ও উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে। ফলে বুধবার পর্যন্ত প্রবল বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।
আসন্ন দুর্যোগের কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। নিচু এলাকা থেকে সাধারণ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকায় এলাকায় মাইকে প্রচার শুরু হয়েছে।
মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। যে সমস্ত মৎস্যজীবী গভীর সমুদ্রে রয়েছেন, তাঁদের নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।
বিভিন্ন এলাকায় ফ্লাড শেল্টার-সহ একাধিক স্কুল ভবন তৈরি রাখা হচ্ছে। শুকনো খাবার, পানীয় জল ত্রিপল মজুত করা হয়েছে। দুই জেলার উপকূল এলাকায় দুর্বল বাঁধগুলি মেরামতের কাজ চলছে কয়েকদিন ধরেই।
শনিবারও একাধিক জায়গায় বাঁধে মাটি দেওয়া হয়েছে। দুর্যোগে বাঁধ ভাঙলে যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তার প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে।
এ দিন দফায় দফায় বৈঠক করেছে জেলা প্রশাসন। বিভিন্ন ব্লকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। দুর্যোগের পর সব দফতরের মধ্যে সমন্বয় করে যাতে কাজে নেমে পড়া যায়, সে দিকে জোর দেওয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
বসিরহাটের মহকুমাশাসক মৌসম মুখোপাধ্যায় বলেন, “সব জায়গায় মাইকে প্রচার চলছে। নদীবাঁধের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বাঁধে সমস্যা থাকলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ফ্লাড শেল্টারগুলি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার, পলিথিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেচ, বিদ্যুৎ দফতর-সহ স্থানীয় প্রশাসনকে তৈরি থাকার জন্য বলা হয়েছে।”
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, “মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে আমরা অনেককে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে আনার ব্যবস্থা করছি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা সব রকম ভাবে প্রস্তুত। সমস্ত দফতরের সঙ্গে সমন্বয়সাধন করে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।”