বেআইনি: প্রকাশ্যেই চলছে হুকিং। নিজস্ব চিত্র
চলতে ফিরতে বহু চোখে পড়বে, রাস্তার মেন লাইন থেকে টানা হয়েছে বিদ্যুতের তার। বাড়ি, দোকান সর্বত্র এ ভাবেই জ্বলছে আলো-পাখা।
বিদ্যুৎ চুরির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে গিয়ে সন্দেশখালির সরবেড়িয়ায় বিদ্যুৎ কর্মীদের উপরে হামলা হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে পুলিশ। বিদ্যুৎ দফতরের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ স্থানীয় মানুষের। তবে সরবেড়িয়া সাব স্টেশনের অধীন জেলিয়াখালিতে গিয়ে দেখা গেল, যত্রতত্র চলছে হুকিং।
ধামাখালির আজিজের ঘাট পেরিয়ে ভ্যান স্ট্যান্ডে দেখা গেল, রাস্তার পাশ দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের লাইন থেকে হুকিংয়ের লাইন টানা হয়েছে। শুধু ভ্যান স্ট্যান্ডেই ১০-১২টি হুকিংয়ের লাইন ঝুলতে দেখা গেল।
ঢালাই রাস্তা ধরে জেলিয়াখালি বাজারের দিকে যাওয়ার পথে চোখে পড়ল সারি দিয়ে হুকিংয়ের তার ঝুলছে। সবটাই খোলা তার, বিপজ্জনক ভাবে ঝুলছে সে সব। যে কোনও মুহূর্তে ঘটতে পারে অঘটন।চোখে পড়ল, এ ভাবেই মাছের ভেড়িতে মোটর চালানো হচ্ছে। কোথাও বেআইনি সংযোগ গিয়েছে বাড়ি পর্যন্ত। আজিজের খেয়াঘাট থেকে জেলিয়াখালি বাজার তিন-চার কিলোমিটার দূরে। এটুকু পথেই দেখা গেল বেআইনি সংযোগের বেশ কিছু উদাহরণ।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক টোটো চালক বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে এ ভাবেই এখানে কাজ চালান মানুষ।’’ আর এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘এ ভাবে বিদ্যুৎ চুরি করা হলেও বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা পদক্ষেপ নেওয়ার সাহস পান না। এলাকার প্রভাবশালী বহু লোকও হুকিং করেন।’’
পরিস্থিতির কথা কার্যত মেনে নিচ্ছেন জেলিয়াখালি পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ধরণীধর পান্ডা। তিনি বলেন, ‘‘এলাকার মানুষকে সচেতন করা হবে, যাতে এমন ভাবে বিদ্যুৎ চুরি না করেন।’’ উপপ্রধানের অবশ্য দাবি, বিদ্যুৎ চুরির প্রবণতা আগের থেকে কমেছে।সন্দেশখালি থানা সূত্রের খবর, বিদ্যুৎ দফতরের তরফে সুনির্দিষ্ট ভাবে কোন অভিযোগ দায়ের হলে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হয়। অনেকের বিরুদ্ধেই বিভিন্ন সময়ে পদক্ষেপ করা হয়েছে।বিদ্যুৎ বণ্টন দফতরের সরবেড়িয়া সাব স্টেশনের ম্যানেজারকে বার বার ফোন করা হলেও ফোন বন্ধ ছিল। দফতরের এক কর্মী জানান, সুনির্দিষ্ট খবরের ভিত্তিতে অনেক সময়ে হুকিংয়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয় ঠিকই। কিন্তু গোলমালের আশঙ্কা থাকেই। ঠিক যেমন ঘটেছে বুধ এবং বৃহস্পতিবার। হামলার ভয়েই অনেক সময়ে সঠিক খবর থাকলেও জরিমানা করতে বা গ্রামের ভিতরে ঢুকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে ইতস্তত করেন কর্মীরা।