Soya Bean

খরচ সামালাতে মিড-ডে মিলে বাদ আলু-সয়াবিন

প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে চাল, ডাল, তেল-সহ আনাজের দাম। বেড়েছে জ্বালানির খরচও। এই পরিস্থিতিতে সরকারি মেনু অনুযায়ী মিড-ডে মিল খাওয়াতে সমস্যায় পড়েছেন বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

সামসুল হুদা

ভাঙড়  শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১০:৪১
Share:

মিড-ডে মিল খাচ্ছে পড়ুয়ারা। মঠেরদিঘি তীর্থমণি এফপি স্কুলে

কোনও স্কুলে কমানো হয়েছে দৈনিক বরাদ্দের পরিমাণ, কোথাও আবার পড়ুয়ার সংখ্যা বেশি দেখানো রয়েছে। কোনও কোনও স্কুল আবার বাজার থেকে আনাজ না কিনে সরাসরি চাষিদের থেকে কম দামে আনাজ কিনে এনে খাওয়াচ্ছেন পড়ুয়াদের। মূল্যবৃদ্ধির জেরে মিড-ডে মিল সামাল দিতে এমনই নানা পথ বেছে নিয়েছে ভাঙড় ও ক্যানি‌ং ২ ব্লকের বহু স্কুল।

Advertisement

প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে চাল, ডাল, তেল-সহ আনাজের দাম। বেড়েছে জ্বালানির খরচও। এই পরিস্থিতিতে সরকারি মেনু অনুযায়ী মিড-ডে মিল খাওয়াতে সমস্যায় পড়েছেন বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ। পড়ুয়া পিছু মিড-ডে মিলের বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য প্রশাসনের কাছে দরবারও করছেন তাঁরা। তবে সে বিষয়ে এখনও কোনও সবুজ সঙ্কেত মেলেনি। তাই অন্য উপায়ে ব্যয় কমানো চেষ্টা করছে স্কুলগুলি। তার জেরে কোপ পড়ছে পড়ুয়াদের পাতে। ভাঙড়ের একটি স্কুলের কর্তৃপক্ষ জানালেন, মিড-ডে মিল থেকে সয়াবিন ও আলু বাদ দেওয়া হয়েছে। একই পরিস্থিতি আরও কয়েকটি স্কুলেও। এদিকে খাওয়ার মান কমায় মিল থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছে অনেক পড়ুয়াই। এরকম চলতে থাকলে ছোটরা অপুষ্টিজনিত কারণে সমস্যায় পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অভিভাবকেরা।

ক্যানিং ২ ব্লকের খোলা চেটিয়া অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১৭৫। ওই স্কুলে মিড-ডে মিলের দায়িত্বে রয়েছে নস্কর পাড়া বীণাপানি এসজিএসওয়াই গ্রুপ। গ্রুপটির দাবি, প্রথম দিকে সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী মিড-ডে মিল চালাতে গিয়ে তাঁরা প্রায় ১০ হাজার টাকা ধার করে। কিন্তু বাজারদর অনুযায়ী মিড-ডে মিলের বরাদ্দ না বাড়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। অভিযোগ, ধার শোধ করার জন্য প্রধান শিক্ষকের কাছে দরবার করেও কোনও সুরাহা হয়নি। তাই এই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চাইছে গ্রুপটি। এ বিষয়ে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক অশোক শা বলেন, ‘‘ওঁরা আমাকে কিছু না জানিয়ে বাজার থেকে ধার করে মিড-ডে মিল চালিয়েছে। বরাদ্দ না বাড়লে আমিই বা কোথা থেকে টাকা দেব? বিষয়টি ব্লক প্রশাসনকে জানিয়েছি।’’

Advertisement

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্যানিং ২ ব্লকের এক প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘যে সমস্ত স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা বেশি সেখানে খরচ সামাল দেওয়া তুলনায় সহজ। কারণ রাঁধুনি, জ্বালানির খরচ সেক্ষেত্রে মোটামুটি একই থাকে। আমাদের স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ৭৮। ফলে খরচ সামাল দিতে কখনও পড়ুয়াদের খাবারের পরিমাণ কমাতে হচ্ছে, কখনও আলু-সয়াবিন বা অন্যান্য আনাজ বাদ দিতে হচ্ছে।’’

ক্যানিং ২ ব্লকের অন্য একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী মিড-ডে মিলের বরাদ্দ বাড়েনি। খরচ সামাল দিতে ছাত্রছাত্রীর উপস্থিতির হার বেশি দেখাতে বাধ্য হচ্ছি।’’

এ বিষয়ে ক্যানিং ২ বিডিও প্রণব মণ্ডল বলেন, ‘‘স্কুলগুলিতে মিড-ডে মিল চালানো নিয়ে বেশ কিছু সমস্যার অভিযোগ আসছে। অনেক স্কুল কর্তৃপক্ষ মিড-ডে মিলের বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement