পোস্টার হাতে বিক্ষোভকারীরা (বাঁ দিকে)। এই পোস্টার লাগানো হয়েছে কালুপুর বাজার এলাকায়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
জনপ্রতিনিধি এক বিজেপি দম্পতিকে মারধরের অভিযোগে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাল বিজেপিরই একাংশ। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁ থানার কালুপুর বাজার এলাকায়। বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল পোস্টার। মারধরের ঘটনায় বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদারকে দায়ী করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা পোস্টারে লিখেছেন, ‘এ কোন আচ্ছে দিন এল, নিজের দলের মহিলা মেম্বার মার খেলেন’। আর একটি পোস্টারে স্বপনের নাম উল্লেখ না করে লেখা হয়েছে ‘ মহিলা মেম্বার পেটানো বনগাঁ দক্ষিণের বিধায়ক হায় হায়’। এলাকার বেশ কয়েক জায়গায় এই পোস্টার সাঁটা হয়েছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিধায়ক।
বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পরিবর্তন করা নিয়ে ডামাডোল চলছেই। তার মধ্যে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল ফের প্রকাশ্যে এল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার বিকেলে বিজেপির একটি কর্মী সম্মেলন ছিল কালুপুর বাজার এলাকায়। অভিযোগ, সেখানে বিধায়কের উপস্থিতিতে এবং মদতে মারধর করা হয়েছে বিজেপির দুই জনপ্রতিনিধি অর্ণব সুর ও তাঁর স্ত্রী লতিকা সুরকে। অর্ণব বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য। লতিকা কালুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য এবং বিরোধী দলনেত্রী। অভিযোগ, বিজেপি কর্মীরা তাঁদের মারধর করে সিঁড়ি থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছেন। ঘটনার পর রবিবার রাতে ওই দম্পতি বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হন।
লতিকা বনগাঁ থানায় কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। পুলিশ ইতিমধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। এদিন অবরোধকারীরা দাবি তুলেছেন, বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে হবে।
এই বিষয়ে বিধায়ক স্বপন বলেন, ‘‘যে মহিলা পঞ্চায়েত সদস্যের কথা বলা হচ্ছে তিনি সম্মেলনে যাননি। অর্ণব সুর বিধানসভা ভোটের আগে থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে আঁতাত করে চলছে। তৃণমূল থেকে টাকা নিয়ে ওদের হয়ে প্রচারও করেছিলেন। তার প্রমাণও আছে। এদিনের বিক্ষোভ, অবরোধ তৃণমূলের মদতে হয়েছে। আমি শুনেছি সম্মেলনে গিয়ে অর্ণবই এক কর্মীকে মারধর করেছিল।’’
বিধায়কের বক্তব্যের বিষয়ে অর্ণব বলেন, ‘‘বিধায়কের কথার কোনও গুরুত্ব নেই। মঙ্গলবার যাঁরা অবরোধ করেছিলেন, তাঁরা সকলেই বিজেপি কর্মী। বিধায়কের উপস্থিতিতেই আমাদের মারধর করা হয়েছিল।’’
বিধায়কের অভিযোগ নিয়ে তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি আলোরানি সরকার বলেন, ‘‘ অর্ণব সুরকে আমি চিনি না। মারধর করা বিজেপির সংস্কৃতি। বনগাঁয় বিজেপির পায়ের তলার মাটি নেই বুঝতে পেরে সব কিছুতেই তৃণমূলের মদত দেখছে।’’
বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি রামপদ দাস বলেন, ‘‘সম্মেলনে মারধরের ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। ওই সময় বিধায়ক সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। বাকি বিষয়গুলি দলীয় স্তরে খোঁজখবর নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে।’’