—প্রতীকী চিত্র।
কালো কাপড়ে ঢাকা মুখ। হাতে ধারালো ছুরি। রাতের অন্ধকারে ঘুরে ঘুরে মহিলাদের খুঁজে চলেছিল তাঁর চোখ। পর পর তিন দিনে তাঁর ‘শিকার’ হয়েছেন দুই মহিলা। তৃতীয় আক্রমণের আগেই বারাসতের সেই দুষ্কৃতীকে ধরে ফেলেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ছুরি-সহ তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যদিও, গত দু’দিনের হামলার ঘটনার সঙ্গে তিনিই যুক্ত কি না, পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে। তবে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, এই দুষ্কৃতীই আগের দু’টি হামলা করেছেন।
বারাসতে গত সোমবার থেকে মহিলাদের উপর আক্রমণের ঘটনা ঘটছে। তিন দিনে দু’বার দুই মহিলার উপর আক্রমণ হয়েছে। দু’জনেরই বুকে ছুরি বসিয়ে দিয়েছেন এক দুষ্কৃতী। তার পর পালিয়ে গিয়েছেন। উভয় ক্ষেত্রেই দুষ্কৃতীর মুখ ঢাকা ছিল কালো কাপড় দিয়ে। আক্রান্ত মহিলারা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সূত্রের খবর, তাঁদের দু’জনের বর্ণনায় মিল পেয়েছে পুলিশ। যদিও এ বিষয়ে সরকারি ভাবে এখনও পুলিশ কোনও বিবৃতি দেয়নি।
বৃহস্পতিবার বারাসতের নবপল্লি রামমন্দির এলাকা থেকে সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁর কাছেও ছুরি ছিল। পুলিশের অনুমান, ধৃত ব্যক্তিই গত দু’দিন মহিলাদের উপর আক্রমণ করেছেন। তিনি মানসিক ভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ নন বলে জানা গিয়েছে। এমনকি, পুলিশ সূত্রে দাবি, সোমবার এবং বুধবারের পর বৃহস্পতিবারও অনুরূপ ঘটনা ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল অভিযুক্তের। তার আগেই পুলিশ তাঁকে ধরে ফেলে।
প্রথম ঘটনাটি ঘটে সোমবার। বারাসত পুরসভা ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রবিনপল্লি এলাকায় ঝুমা সাহা নামের এক মহিলা আক্রান্ত হন। তিনি বারাসতের হৃদয়পুর এলাকার বাসিন্দা। পুলিশকে জানিয়েছেন, সে দিন রাত ৯টা নাগাদ নিজের দেওরের ছেলেকে টিউশন থেকে নিয়ে আসতে যাচ্ছিলেন। আচমকা তাঁর দিকে এগিয়ে আসে একটি বাইক। সেখানে দু’জন ছিলেন এবং তাঁদের মুখ কালো কাপড়ে ঢাকা ছিল। তাঁদেরই এক জন ছুরি দিয়ে মহিলার বুকে আঘাত করেন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে ভর্তি করানো হয় বারাসতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে।
প্রায়ই একই রকমের ঘটনা ঘটে বুধবারও। আরও এক মহিলার বুকে ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়। এর পরেই বারাসত শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রাতে বা ভোরে একা বাড়ির বাইরে বেরোতেই ভয় পাচ্ছেন মহিলারা। পর পর দু’টি ঘটনার পর পুলিশ নড়েচড়ে বসে। বারাসত থানার আইসি মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বৃহস্পতিবার বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেন। তাঁরা সিসি ক্যামেরার একাধিক ফুটেজ খতিয়ে দেখেন। দিকে দিকে মোতায়েন করা হয় বাড়তি পুলিশ। বৃহস্পতিবার পুলিশের জালে ধরা পড়েছেন এক জন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে রহস্যের কিনারা করতে মরিয়া পুলিশ।