মারধর: আকাশকে। নিজস্ব চিত্র।
বারাসত জেলা হাসপাতালের সহকারী সুপার বলেই সকলের কাছে পরিচয় দিত সে। অভিযোগ, সেই পরিচিতির সুযোগ নিয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধী মানুষজনকে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিত। সেই আশ্বাস দিয়ে টাকাও তুলত বলে অভিযোগ।
রবিবার প্রতারিত লোকজন আকাশ দাস নামে ওই ব্যক্তিকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে।
ঘটনাটি অশোকনগরের শেরপুর কালীবাড়ি এলাকার। পুলিশ জানিয়েছে আকাশের বাড়ি অশোকনগরের রাজীবপুরে। ইদানীং সে শেরপুর কালীবাড়ি এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকত।
পুলিশের কাছে হরিপুর এলাকার বাসিন্দা গৌরী দেবনাথ নামে এক মহিলা অভিযোগ করে জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ে সোমা মূক ও বধির। দিন কয়েক আগে আকাশ তাঁর বাড়িতে যায়। নিজেকে বারাসত জেলা হাসপাতালের সহকারী সুপার হিসেবে পরিচিয় দেয়। সোমার প্রতিবন্ধী শংসাপত্র-সহ বিভিন্ন নথিপত্র দেখে। প্রতিশ্রুতি দেয়, সোমাকে সে বিভিন্ন সরকারি সুযোগ পাইয়ে দেবে। বিনিময়ে গৌরীর কাছ থেকে ১ হাজার টাকা নেয়।
গৌরী পুলিশকে জানিয়েছেন, পরে তিনি জানতে পারেন, আকাশ বারাসত জেলা হাসপাতালের সহকারী সুপার নয়। আরও অনেকের কাছ থেকে সে একই পরিচয় দিয়ে টাকা তুলেছে।
প্রতারিত মানুষদের অভিযোগ, বাড়িতে প্রতিবন্ধী সদস্য থাকলেই আকাশ সেখানে পৌঁছে যেত। প্রতিবন্ধী শংসাপত্র, ভাতা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে এক-দু’হাজার টাকা করে নিত। অশোকনগর, হাবড়া, আমডাঙার অনেকের থেকে এ ভাবে সে টাকা তুলেছে বলে জানতে পারছে পুলিশ। এদিন সকালে প্রতারিত কিছু মানুষ আকাশের ভাড়া বাড়িতে চড়াও হয়ে টাকা ফেরত চান। আকাশকে মারধর করা হয়। আকাশ পুলিশের কাছে দাবি করেছে, লোকজনের থেকে টাকা নিলেও হাসপাতালের আধিকারিক হিসেবে পরিচয় দেয়নি। আকাশের পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, তাঁরা জানতেন আকাশ হাবড়া বাসস্ট্যান্ডে কোনও কাজ করে।
বারাসত জেলা হাসপাতাল সুপার সুব্রত মণ্ডল ঘটনার কথা শুনেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ভাগ্যিস আকাশ নিজেকে সুপার পরিচয় দেয়নি!’’