গাড়ি থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন সিভিক ভলান্টিয়ারেরা। দত্তপুকুর মোড়ে ছবিটি তুলেছেন সুদীপ ঘোষ
পুলিশের কাজে সাহায্যের জন্য নিয়োগ করা হয়েছিল সিভিক ভলান্টিয়ারদের। কিন্তু অভিযোগ, কার্যত পুলিশের নানা কাজই করছেন তাঁরা। স্থানীয় সূত্রের খবর, অনেক ক্ষেত্রেই চুরি-ছিনতাইয়ের তদন্ত থেকে শুরু করে বাজি-পটকা উদ্ধার বা ধরপাকড়েও পুলিশের সঙ্গে দেখা যায় সিভিক ভলান্টিয়ারদের। রাস্তাঘাটে গাড়ি বা বাইক দাঁড় করিয়ে জরিমানাও নেন তাঁরাই। এমনকী, থানায় কম্পিউটারের কাজ বা অভিযোগ নেওয়ার কাজ করেন সিভিক ভলান্টিয়াররা।
উত্তর ২৪ পরগনার যশোর রোড, টাকি রোড ও ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখা গেল, যানবাহনের উপরে নজরদারি চালাচ্ছেন সিভিক ভলান্টিয়াররাই। পথচলতি মানুষজন জানান, পুলিশ সব সময়ে থাকে না। বেশিরভাগ সময়ে সিভিক ভলান্টিয়াররাই থাকেন। নিত্যাযাত্রী সুব্রত পাল বলেন, “হেলমেট না থাকায় সিভিক ভলান্টিয়ার বাইক দাঁড় করিয়ে জরিমানা করেছিল। যাতায়াতের সময়ে বহুবার নজরে পড়েছে, নিয়ম ভাঙা গাড়ি থামিয়ে ওরাই জরিমানা করছে। পুলিশের হয়ে নিয়ম ভেঙে অতিরিক্ত পণ্য নিয়ে চলা ট্রাক থেকেও এরাই টাকা আদায় করে।”
বারাসত জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাজ পুলিশকে বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করা। কিন্তু পুলিশের কাজ তারা করতে পারে না। তবে বিভিন্ন থানা সূত্রের খবর, প্রয়োজনীয় সংখ্যক কনস্টেবল না থাকায় অনেক ক্ষেত্রে সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে কাজ করাতে হয়। এক আধিকারিক বলেন, “সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে কাজ করানোর ক্ষেত্রে জটিলতায় পড়তে হয়। গোপনীয়তা নষ্টের আশঙ্কা থাকে। কিন্তু করারও কিছু নেই।”
অতিরিক্ত কাজে অখুশি সিভিক ভলান্টিয়ারেও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিভিক ভলান্টিয়ারের কথায়, “দিনে আট ঘণ্টা কাজের কথা। কিন্তু অনেক সময়েই ১৬-১৮ ঘণ্টা কাজ করতে হয়েছে। সব কাজই করতে হয়। আসামী ধরতে যাই, আবার জেনারেল ডায়েরিও লিখতে হয়।” আর এক সিভিকের কথায়, “অনেক সময়ে বোমা উদ্ধার করতে গিয়েছি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়। পুলিশের মতো বিমা তো আমরা পাই না। দুর্ঘটনা ঘটলে কী হবে আমাদের?”