অপরিষ্কার: এখান থেকে রান্না হয়ে হোটেলে যায়। নিজস্ব চিত্র
দোকানে ঢুকতেই সাজানো রয়েছে হরেক রকমের খাবার। ঝাঁ চকচকে দোকানের সামনে ভাজা হচ্ছে চিকেন পকোড়া। কিন্তু ভিতরের রান্নাঘরে ঝুল-কালি। আরশোলা, টিকটিকি খাবারের পাশ দিয়ে হেঁটেচলে বেড়াচ্ছে। রান্নাঘরের পাশেই এঁদো পুকুর। ওই জলেই ধোয়া হচ্ছে থালা-বাসন।
ডায়মন্ড হারবারের একটি রেস্তোঁরার চিত্র।
শুধু ওই রেস্তোঁরা নয়, বেশির ভাগ খাবারের দোকানেরই এই অবস্থা। অপরিষ্কার ভাবে রান্না করা হয়। দিনের শেষে অতিরিক্ত খাবার এই সমস্ত দোকানগুলি ফেলে দেয় না। ফ্রিজে মজুত করে রাখে। সেই খাবারই পর দিন গরম করে বিক্রি করা হচ্ছে।
কোনও জায়গায় দেখা গেল আগের দিনের রান্না তরকারি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তার থেকে আলুগুলিকে তুলে নিয়ে ধুয়ে মাছের ঝোলে মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে। একটি দোকানের কর্মচারী বললেন, ‘‘কিছু খাবার ধুয়ে রেখে দিই। পর দিন সেই খাবারই নতুন তেলে ভেজে, খদ্দেরদের দিই।’’
রাস্তার পাশে ধুলোর মধ্যেই নানা রকম ফাস্ট ফুডের দোকান। কেনাবেচা চলছে। কোথাও পলিথিনের ছাউনির তলায় হোটেল। খাবার পাশ দিয়ে ধোঁয়া উড়িয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে বাস। মাছি ভিন ভিন করছে। জলও সব জায়গায় পরিস্রুত নয়। যে প্লাস্টিকের ড্রামে জল মজুত থাকে অনেক হোটেলে, সেই ড্রাম শেষ কবে ধোয়া হয়েছে, মনে করতে পারেন না কর্মীরা।
ডায়মন্ড হারবারের এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘বাসি খাবার খেলে পেট খারাপ হতেই পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে আরও ক্ষতিকর। একই তেলে বার বার ভাজা হচ্ছে খাবার। এতে খাদ্যগুণ নষ্ট হচ্ছে। খেলে বড় কোনও অসুখও হতে পারে।’’
খাবারের দোকান থেকে বেরোচ্ছিলেন কলেজ পড়ুয়া শিউলি দাস, পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়রা। বলে গেলেন, ‘‘কী করে জানব, কেমন পরিবেশে রান্না হচ্ছে। ভাল লাগছে, তাই খাচ্ছি। তবে সত্যিই যদি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রান্না হয়, প্রশাসনের বিষয়টি দেখা উচিত।’’
ডায়মন্ড হারবারের পুরপ্রধান মীরা হালদার বলেন, ‘‘হোটেলগুলিতে খাবারের গুণমান দেখতে কখনও অভিযান চালানো হয়নি এটা ঠিক। তবে কেউ কখনও এ নিয়ে অভিযোগও করেননি।’’ তবে বিষয়টি নিয়ে নাড়াচাড়া পড়ায় কিছু দিনের মধ্যেই পরিদর্শককে সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।