ডেঙ্গি গত বছর ঘুম কেড়ে নিয়েছিল নৈহাটি পুর-কর্তৃপক্ষের। দশটি ওয়ার্ডে রোগের প্রকোপ ছড়িয়েছিল। হাসপাতালে ভর্তি হয় অনেককে।
ফের একই রকম যাতে পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সে জন্য এ বার বর্ষা আসার মাস চারেক আগে থেকেই অভিযান শুরু করেছে পুরসভা। পুরপ্রধান অশোক চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ডেঙ্গি প্রতিরোধে সব থেকে কঠিন কাজ হল সচেতনতা তৈরি করা। ব্যানার, পোস্টার যতই টাঙাই না কেন, মানুষের বদভ্যাস ছাড়াতে মাঝে মাঝে জোর খাটাতে হচ্ছে।’’
কেমন সেই জোর?
পুরসভার ওয়ার্ড ৩১টি। কোথাও ফেলে রাখা ডাবের খোলা, বাতিল টায়ার, কোথাও আবার জমিয়ে রাখা প্লাস্টিকের মধ্যে মশার লার্ভা কিলবিল করছে। পুরসভার চার সাফাই কর্মী সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পরিষ্কার করে চলেছেন ওই সব আবর্জনা।
পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল (স্বাস্থ্য) সনৎ দে’র নেতৃত্বে পুরকর্মীরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে মানুষকে সচেতন করছেন। এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন। তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। দিন কয়েক আগেই ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দার জ্বর হয়। তাঁর রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়া গিয়েছে হাসপাতাল সূত্রের খবর। পুরসভার মাতৃসদনে চিকিৎসার পরে সম্প্রতি সুস্থ হয়ে তিনি বাড়ি ফিরেছেন।
পুরসভার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ বছর এখনও পর্যন্ত নৈহাটিতে জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫৬। গত বছর এই সময়ে জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪৮২। এর মধ্যে ৬২ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছিল। সনৎবাবুর দাবি, ‘‘ডেঙ্গি প্রতিরোধে এ বার সরকার আগে থেকে উদ্যোগী হয়েছিল। আগাম প্রস্তুতি নেওয়া এবং সরেজমিন খতিয়ে দেখা শুরু করায় এ বার আমরা অনেকটা সফল হতে পেরেছি। এত কিছুর পরেও কিন্তু বাসিন্দাদের আরও সচেতন হতে হবে।’’
গত কয়েক দিনে জ্বরের খবর এসেছে মূলত গৌরীপুর ও ক্যাওড়াপাড়া অঞ্চল থেকে। সেখানকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভা যদি নিয়মিত সাফাই করে তা হলে বহু জায়গায় জল জমে থাকে না। কিন্তু সেটা হয় না। সর্বত্রই নজরদারি চলছে বলে দাবি পুর কর্তৃপক্ষের।