Para Badminton

Para badminton: বাধা পেরিয়ে উগান্ডায় পৌঁছে এল সাফল্য

ভাঙড় ২ ব্লকের ভগবানপুর এলাকায় বাসিন্দা শাহজাহান। পোলিয়োয় বাঁ পা অকেজো। সংসার চালাতে ডেলিভারি বয়ের কাজ করেন দুই সন্তানের বাবা শাহজাহান।

Advertisement

সামসুল হুদা

ভাঙড়  শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২১ ০৯:১৩
Share:

সফল: শাহজাহান বুলবুল

আর্থিক অনটনে এক সময় প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়াই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। শেষ পর্যন্ত সব বাধা পেরিয়ে উগান্ডায় গিয়ে পদক জিতে ফিরলেন ভাঙড়ের প্রতিবন্ধী ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় শাহজাহান বুলবুল। উগান্ডার আন্তর্জাতিক প্যারাব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতায় মিক্সড ডাবলসে ব্রোঞ্জ জিতেছেন শাহজাহান। সিঙ্গলসে অবশ্য জার্মানির প্রতিযোগীর কাছে হেরে পদক হাতছাড়া হয়েছে তাঁর।

Advertisement

ভাঙড় ২ ব্লকের ভগবানপুর এলাকায় বাসিন্দা শাহজাহান। পোলিয়োয় বাঁ পা অকেজো। সংসার চালাতে ডেলিভারি বয়ের কাজ করেন দুই সন্তানের বাবা শাহজাহান। সেই সঙ্গে চালিয়ে যান ব্যাডমিন্টনও। দিন কয়েক আগে উগান্ডায় আন্তর্জাতিক প্যারাব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতায় যোগদানের সুযোগ আসে। কিন্তু সুদূর আফ্রিকার উগান্ডায় গিয়ে প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে প্রয়োজন ছিল লক্ষাধিক টাকার। সেই টাকা ছিল না শাহজাহানের কাছে। ফলে অনিশ্চিত হয়ে পড়ে তাঁর আফ্রিকা সফর। মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন তিনি।

অর্থের অভাবে প্রতিভাবান খেলোয়াড়ের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে না পারার খবর প্রকাশিত হয় আনন্দবাজারে। এরপরেই স্থানীয় ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ভাঙড় ২ ব্লক প্রশাসনের আধিকারিক, কাশীপুর থানার আধিকারিক, কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার আধিকারিক-সহ অনেকে সাহায্যের হাত বাড়ান। শেষমেশ উগান্ডার উড়ান ধরেন ভাঙড়ের যুবক। ১৪ নভেম্বর থেকে উগান্ডার কাম্পালা শহরে শুরু হয় ‘উগান্ডা প্যারাব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট’। সেখান থেকে ব্রোঞ্জ জিতে গত সপ্তাহেই ভাঙড়ে ফিরেছেন শাহজাহান।

Advertisement

এর আগে ২০১৫ সালে লাতিন আমেরিকায় পেরু ওপেন ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টে মেন্স ডাবলসে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন শাহজাহান। ওই বছরই রাজ্য সরকারের ‘খেল সম্মান’ পান। তার আগে ২০১৩ সালে তিনি জার্মানিতে অনুষ্ঠিত ‘ব্যাডমিন্টন ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন’-এ কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছন। ২০১৪ সালেও ইন্দোনেশিয়ায় ‘ব্যাডমিন্টন ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন’-এর কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেন তিনি। উগান্ডায় পদক জয়ের ফলে এশিয়ান গেমস, কমনওয়েলথ গেমসের মতো প্রতিযোগিতায় যোগদান প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেল তাঁর।

শাহজাহান বলেন, “যাঁরা আমাকে আর্থিক ভাবে সহযোগিতা করেছেন, তাঁদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তবে আগামী দিনে এই ধরনের আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে যোগদান করার ক্ষেত্রে যদি কোনও স্পনসর পাই, তা হলে কিছুটা সুরাহা হয়। সরকারি ভাবে একটা চাকরির ব্যবস্থা হলে, পুরো পরিবার উপকৃত হব।”

রবিবার রাতে কাশীপুর থানার ওসি প্রদীপ পাল সংবর্ধনা দেন শাহজাহানকে। তিনি বলেন, “শাহজাহান এলাকার গর্ব। আমি চেষ্টা করব সব সময়ে পাশে থাকার।” ভাঙড় ২ বিডিও কার্তিকচন্দ্র রায় বলেন, “আগেও আমরা ওঁকে সব রকম সহযোগিতা করেছি। শাহজাহান কিছু সমস্যার কথা জানিয়েছেন। আমরা প্রশাসনিক ভাবে চেষ্টা করব, তাঁকে সব রকম ভাবে সহযোগিতা করার।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement