প্রতীকী ছবি।
পঞ্চায়েতের অ্যাম্বুল্যান্সের ইঞ্জিন বিক্রির অভিযোগে পুলিশ এক গ্যারাজ মালিককে গ্রেফতার করল। রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে বাগদা থানার হেলেঞ্চা এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম মুকুল সরকার। পুলিশ অ্যাম্বুল্যান্সটি বাজেয়াপ্ত করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। মুকুল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
অ্যাম্বুল্যান্সের ইঞ্জিন বিক্রির অভিযোগে নাম জড়িয়েছে হেলেঞ্চা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও তাঁর স্বামীরও। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৯ সালে বাগদার তৎকালীন তৃণমূল বিধায়ক দুলাল বর তাঁর বিধায়ক তহবিলের টাকায় অ্যাম্বুল্যান্সটি দিয়েছিলেন হেলেঞ্চা গ্রাম পঞ্চায়েতকে। দুলাল এখন বিজেপির বিধায়ক। বাগদা থানায় লিখিত অভিযোগে দুলাল জানিয়েছেন, হেলেঞ্চা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের চায়না বিশ্বাস এবং তাঁর স্বামী ঝন্টু বিশ্বাসের উপস্থিততে অ্যাম্বুল্যান্সের ইঞ্জিনটি পুলক বিশ্বাস নামে একজনের কাছে ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করা হয়েছে। অ্যাম্বুল্যান্সটি চালাতেন মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তি। সেও উপস্থিত ছিলেন। অ্যাম্বুল্যান্সের ইঞ্জিনটি খুলে অন্য গাড়িতে লাগিয়ে দিয়েছিলেন গ্যারেজ মালিক মুকুল। দুলাল বলেন, ‘‘রবিবার ওই খবর পেয়ে আমি গ্যারাজ মালিকের কাছে গিয়ে ঘটনার কথা সব জানতে পারি।’’ রবিবার ঘটনার কথা জানাজানি হতেই বিকেলে দুলালের নেতৃত্বে লোকজন হেলেঞ্চাতে বনগাঁ-বাগদা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ গিয়ে দুলালের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ নিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, রাজ্য সড়ক বেআইনি ভাবে অবরোধ করার অভিযোগে দুলালের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। দুলাল বলেন, ‘‘অবরোধ আমি করিনি। এলাকার লোকজন করেছেন।’’
বিধায়কের অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান চায়না। তাঁর কথায়, ‘‘রাজনৈতিক যড়যন্ত্র করতে বিধায়ক মিথ্যে অভিযোগ করছেন। অ্যাম্বুল্যান্সের যন্ত্রাংশ চুরি হয়েছে জানতে পেরে আমিই থানায় অভিযোগ করেছিলাম।’’
পঞ্চায়েত সূত্রে জানানো হয়েছে, অ্যাম্বুল্যান্সটি অনেক বছর ধরে অকেজো ও খারাপ হয়ে পঞ্চায়েতেই পড়েছিল। সেখানে একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। মানুষের যাতায়াতে অসুবিধা হচ্ছিল। কিছুদিন আগে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের কাজ শুরু হতে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে অ্যাম্বুল্যান্সটি মুকুলের গ্যারেজে দেওয়া হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল অ্যাম্বুল্যান্সটি সারাই করে প্রসূতিদের যাতায়াতে ব্যবহার করা হবে। চায়না বলেন, ‘‘রবিবার জানতে পারি গ্যারেজ থেকে অ্যাম্বুল্যান্সের যন্ত্রাংশ চুরি হচ্ছে। আমি থানায় অভিযোগ করি। গ্যারেজ মালিক গ্রেফতারও হয়েছে।’’ বাসিন্দারা অবশ্য দাবি করেছেন, ইঞ্জিন চুরির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই তড়িঘড়ি প্রধান অভিযোগ করেছেন, নিজের পিঠ বাঁচাতে। ইঞ্জিন পাল্টানোর সময় তাঁরাই হাতেনাতে ধরে ফেলেছি।