গোসাবার বিজেপি প্রার্থী পলাশ রানা। নিজস্ব চিত্র।
গোসাবা বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে শেষ পর্যন্ত এক দলবদলু নেতাকেই প্রার্থী করল বিজেপি। আগামী ৩০ অক্টোবর দক্ষিণ ২৪ পরগনার এই কেন্দ্রে পদ্ম প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন পলাশ রানা। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের পরে যিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন।
পলাশের নাম ঘোষণা হওয়ার পরে বৃহস্পতিবার দেওয়াল লেখা শুরু করে দিয়েছেন এলাকার বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। শুক্রবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরই গোসাবা বিধানসভার প্রত্যন্ত দ্বীপ এলাকাগুলিতে তিনি প্রচার শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন প্রার্থী।
রায়দিঘির বাসিন্দা এই নেতাকে প্রার্থী করায় স্থানীয় বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের একাংশের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে সে বিষয়ে গুরুত্ব দিতে নারাজ জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। দলের বারুইপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুনীপ দাস বলেন, ‘‘বিজেপি কোনও আঞ্চলিক দল নয়। যে কাউকেই প্রার্থী করতে পারে দল। আর প্রার্থীকে নিয়ে কোনও অসন্তোষের বিষয় নেই।’’
পেশায় ব্যবসায়ী পলাশ রায়দিঘি এলাকার প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। অভিনেত্রী দেবশ্রী রায় বিধায়ক হওয়ার পরে এলাকায় তাঁর প্রভাব বাড়তে শুরু করে। সে সময় জয়হিন্দ বাহিনীর জেলা সহ-সভাপতিরও দায়িত্ব সামলেছেন পলাশ। যদিও দলের একাংশের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে গত লোকসভা ভোটের পরই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। বিজেপি-র মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলা কমিটির অন্যতম সম্পাদকের দায়িত্বও দেওয়া হয় তাঁকে। এ বার প্রথম বিধানসভায় প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ পেলেন পলাশ।
বৃহস্পতিবার পলাশ বলেন, ‘‘গোসাবার মত সুন্দরবনের গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভায় এতদিন তেমন কোনও উন্নয়নই হয়নি। প্রত্যন্ত দ্বীপগুলির বাসিন্দাদের জীবন নিয়েও রাজ্য সরকার উদাসীন। তাই সাধারণ মানুষ দ্বীপ ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। অর্থনৈতিক উন্নতি এবং বিকল্প কর্মসংস্থানের পথ না থাকায় জঙ্গলে মাছ, কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের পেটেও যাচ্ছেন অনেকে। আমরা এই পরিস্থিতির বদল ঘটাতে চাই।’’
পলাশকে ইতিমধ্যেই ‘দলবদলু এবং বহিরাগত’ বলে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে তৃণমূল। গোসাবা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘গোসাবায় বিজেপি-র কোনও নেতা নেই। এখানে এত কাজ হয়েছে যে বিজেপি মুখ তুলে তাকাতে পারবে না। গত বারের বিজেপি প্রার্থীও তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তাই বহিরাগত, দলবদলু নেতাকে প্রার্থী করতে হয়েছে। এই ভোটে বিজেপি-র জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। আমি এক লক্ষ ভোটে জিতব।’’