ফর্ম পূরণ টাকা দিয়েও

প্রশাসন থেকে যদিও বারবারই বলা হচ্ছে, কার্ড সংশোধনের সঙ্গে এনআরসির কোনও সম্পর্ক নেই। আতঙ্ক কমাতে এবং সচেতনতা বাড়াতে তাই এ বার সর্বদল বৈঠক করলেন বাদুড়িয়ার বিডিও ত্রিভুবন নাথ। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, পঞ্চায়েত পর্যায়ে বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে গিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা হবে।

Advertisement

নির্মল বসু

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:৪৬
Share:

এই পরিস্থিতিতে লাভ হচ্ছে এক শ্রেণির সাইবার ক্যাফের মালিক এবং দালালদের। ফাইল চিত্র।

রেশন কার্ড সংশোধন এবং নতুন রেশন কার্ড তৈরির কাজ চলছে বিভিন্ন ব্লকে। একই সময়ে অনলাইনে শুরু হয়েছে ভোটার কার্ড সংশোধনের কাজও। যাকে ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা আশঙ্কা, গুঞ্জন। এক দিকে যখন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব নাগরিক পঞ্জি নিয়ে হাওয়া গরম করছেন, তখন এই দুই কাজ আসলে নাগরিক পঞ্জি তৈরিরই প্রাথমিক প্রক্রিয়া কিনা, তা নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে বিস্তর। প্রশাসন থেকে যদিও বারবারই বলা হচ্ছে, কার্ড সংশোধনের সঙ্গে এনআরসির কোনও সম্পর্ক নেই। আতঙ্ক কমাতে এবং সচেতনতা বাড়াতে তাই এ বার সর্বদল বৈঠক করলেন বাদুড়িয়ার বিডিও ত্রিভুবন নাথ। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, পঞ্চায়েত পর্যায়ে বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে গিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা হবে।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে লাভ হচ্ছে এক শ্রেণির সাইবার ক্যাফের মালিক এবং দালালদের। অভিযোগ, তাঁরা মানুষকে এনআরসির ভয় দেখাচ্ছেন। বেশি টাকার বিনিময়ে ভোটার কার্ডের কাজ করাচ্ছেন। অনেকে রেশন কার্ডের ফর্ম পূরণ করে দিতেও টাকা নিচ্ছেন। বিডিওর বৈঠকে এই সব সাইবার ক্যাফের মালিকদের সতর্ক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এনআরসি ভীতিতে দ্রুত কার্ড সংশোধনে শ’য়ে শ’য়ে মানুষ কাজ বন্ধ রেখে কখনও সাইবার ক্যাফে, কখনও পঞ্চায়েত, কখনও পুরসভা, কখনও ব্লক অফিসে ছোটাছুটি করছেন। ভিড় এড়াতে ইতিমধ্যে বসিরহাট ১ ব্লক দফতরের সামনে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, অনলাইন আবেদনপত্রের শুনানি এখানে আর হবে না। ভোটের কাজে নিযুক্ত আধিকারিকেরা এরপরে বাড়ি বাড়ি যাবেন। তাঁদেরকেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে হবে।

বাদুড়িয়ার যুগ্ম বিডিও পার্থসারথি ঘটক বলেন, ‘‘এনআরসির সঙ্গে ভোটার কার্ড রেজিস্ট্রেশন বা ডিজিটাল রেশন কার্ডের সম্পর্ক নেই। ভুল বুঝে মানুষ ব্লক, পঞ্চায়েত, পুরসভা এবং সাইবার ক্যাফেগুলিতে ভিড় করছেন। পুজোর পরে ব্লক পর্যায়ের অফিসারেরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার কার্ড রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে সরকারি অ্যাপসে অন্তর্ভূক্ত করবেন। ফলে এ বিষয়টি নিয়ে হুড়োহুড়ি করার কোনও কারণ নেই। এনআরসি নিয়ে কোনও বিজ্ঞপ্তিও আমাদের কাছে আসেনি।’’ তিনি জানান, রেশন কার্ডের ভুলভ্রান্তি এবং ডিজিটাল রেশন কার্ডের জন্য আবেদনের বিষয়টি ভিন্ন ব্যাপার। এ বিষয়ে পঞ্চায়েত, পুরসভা এমনকী ব্লক থেকে নির্দিষ্ট ফর্ম নিয়ে পূরণ করে জমা দেওয়া যাবে।

Advertisement

এ রাজ্যে এনআরসি চালু হচ্ছে বলে গুজব ছড়িয়েছে। বসিরহাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ ফজলুল হক বলেন, ‘‘এনআরসি নিয়ে মানুষের মনে ভয় তৈরি হয়েছে। এই আতঙ্কে ভোটার কার্ড ঠিক করতে কম্পিউটারের দোকানে লাইন দিচ্ছেন মানুষ। কাজ চলছে গভীর রাত পর্যন্ত। রেশন কার্ডের ভুল সংশোধনেও লম্বা লাইন পড়ছে।’’ বাদুড়িয়া ব্লক সূত্রে খবর, হাজার হাজার মানুষ ডিজিটাল রেশন কার্ডের জন্য ফর্ম ভর্তি করে ব্লক, পঞ্চায়েত এবং পুরসভায় যাওয়ার ফলে সংশ্লিষ্ট দফতরের কাজকর্ম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement