চিকিৎসাধীন: জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের জন্য মশারির ব্যবস্থা করা হয়েছে মিনাখাঁ ব্লক হাসপাতালে। ছবি: নির্মল বসু।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলায় লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা। জ্বর বাড়ায় আতঙ্কিত এলাকার মানুষ। চিন্তা বাড়ছে স্বাস্থ্য কর্তাদেরও।
বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলায় বর্তমানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৬৩। গত কয়েকদিনে সংক্রমণের হার কিছুটা বেড়েছে। এর মধ্যেই আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়াও। স্বাস্থ্য জেলা সূত্রের খবর, গত কয়েকদিনে মিনাখাঁয় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ জন। ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩৮। সন্দেশখালি ১ ব্লকে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ২৩। ডেঙ্গি হয়েছে ৩ জনের। হাড়োয়ায় ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত সংখ্যা ৩৭, আর ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ জন।
প্রতিদিন জ্বর নিয়ে বহু মানুষ ভিড় করছেন ব্লক হাসপাতালগুলিতে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। ব্লকে ব্লকে ডেঙ্গি এবং ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ ঠেকাতে বিভিন্ন জায়গায় ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড লাগানো হচ্ছে। পাশাপাশি গ্রামীণ সম্পদ কর্মীদের কাজে লাগানো হচ্ছে। পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে জমে থাকা বিভিন্ন নিকাশি নালা পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে। পরিষ্কার করা হচ্ছে হাসপাতাল চত্বরও। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অসুস্থদের মশা, মাছির হাত থেকে রক্ষা করতে মশারির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সন্দেশখালির ১-এর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবব্রত বিশ্বাস বলেন, “ইতিমধ্যে এই ব্লকে ডেঙ্গি এবং ম্যালেরিয়ায় ২৫ জনের আক্রন্তের খবর মিলেছে। তবে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করার ফলে তাঁরা এখন বিপদমুক্ত। এলাকার বাসিন্দাদের কাছে অনুরোধ, এই পরিস্থিতিতে অবশ্যই মশারি টাঙিয়ে ঘুমোন। বাড়ির আশ-পাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন।” মিনাখাঁর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুমন দাস বলেন, “এখানে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা ইতিমধ্যে ৫০ ছাড়িয়েছে। তবে সময় মতো চিকিৎসার ফলে সকলেই সুস্থ আছেন।” তিনি জানান, আশাকর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে পাড়ায় পাড়ায় নজরদারি চালানো হচ্ছে। সংক্রমণ ঠেকাতে এলাকার বাসিন্দাদেরও সচেতন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। মশা মারার স্প্রে ও ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো হচ্ছে। জ্বর হলেই রক্ত পরীক্ষা করা হচ্ছে। রোগ যাতে ছড়াতে না পারে সে দিকে লক্ষ্য রেখে দ্রুত অসুস্থদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলার আধিকারিক দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলায় ইতিমধ্যেই ১১ লক্ষ প্রথম ডোজ় এবং ৪ লক্ষ দ্বিতীয় ডোজ় করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। ফলে করোনা সংক্রমণে লাগাম টানা গিয়েছে। অন্য জ্বর নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য দফতরের কড়া নজরদারি চলছে। ব্লিচিং ছড়ানো-সহ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।”