পরিদর্শন: প্রশাসনিক কর্তাদের টহল বাজারে। —নিজস্ব চিত্র
পেঁয়াজের ঝাঁজে নয়, দামের ঝাঁজে ক্রেতাদের চোখে জল আসছে এখন। কোথাও ১২০ টাকা কেজি কোথাও তারও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ।
এই অবস্থায় বাজার দর যাচাই করতে বুধবার সকালে ডায়মন্ড হারবার স্টেশন বাজার-সহ ৩টি বাজারে হাজির হন ডায়মন্ড হারবারের মহকুমাশাসক ও প্রশাসনের কর্তারা।
এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ ডায়মন্ড হারবার স্টেশন বাজারে পেঁয়াজের আড়ৎদার সুবিমলের আড়তে যান তাঁরা। সেখানে প্রায় কয়েক কুইন্টাল পেঁয়াজ মজুত রয়েছে। প্রশাসনের আধিকারিকরা ওই আড়তদারের কাছে কেনা দামের কাগজপত্র দেখতে চান। সুবিমল ছাড়া মোট ৩ জন আড়ত ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলেন আধিকারিকরা। সকলেই কলকাতা থেকে কিনে আনা পাইকারি দামের কাগজপত্র দেখান। তাতে দেখা গিয়েছে, পেঁয়াজের পাইকারি কেনা দাম কিলো প্রতি ৯০ টাকা। সেই পেঁয়াজ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা বা তার চেয়ে আরও বেশি দামে।
এরপর তাঁরা বাজারের বিভিন্ন দোকানে হানা দেন। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। অয়ন পুরকাইত নামে এক দোকানি জানান, আমরা পাইকারি দামেই পেঁয়াজ কিনে সামান্য লাভ রেখে বাজারে বিক্রি করছি। কোনও কালোবাজারি নেই। তাঁর দাবি, আগে ১ কুইন্টাল পেঁয়াজ যে দামে কিনতাম এখন তার দাম অনেক বেড়ে গিয়েছে। একই ভাবে আলুর পাইকারি বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে বেশি দামে বিক্রি করছি।
এই টালবাহানার মধ্যেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন সুফল বাংলার স্টলে পাওয়া যাবে পেঁয়াজ কিলো প্রতি ৫৯ টাকা করে। পরিবার পিছু পেঁয়াজ দেওয়া হবে ৫০০ গ্রাম করে। সে জন্য দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ২৯টি ব্লকের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৩ টন পেঁয়াজ।
এদিনে বাজারে নজরদারি চালাতে গিয়েছিলেন ডায়মন্ড হারবার মহকুমাশাসক সুকান্ত সাহা, মহকুমা পুলিশ আধিকারিক শ্যামল মণ্ডল-সহ অন্য আধিকারিকরা। সুকান্ত সাহা বলেন, ‘‘পেঁয়াজ, আলু-সহ নানা আনাজের দামের বিষয়ে খোঁজ নিতে এবং কোনও কৃত্রিম ভাবে মজুত রেখে দাম বাড়াছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে ডায়মন্ড হারবার স্টেশন বাজার, কপাটহাট বাজার আরও একটি বাজারে পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। কিন্তু তেমন কিছু নজরে আসেনি। বিক্রিতাদের সতর্ক করা হয়েছে। বাজারে বাজারে হানা লাগাতার চলবে।
এ দিকে পেঁয়াজের দাম বাড়ায় প্রায় সব খাবারেই পেঁয়াজের পরিমাণ কমেছে। স্যালাড বলতে এখন শশা, গাজর আর পাতিলেবুর রস। এমনকী সরকারি অনুষ্ঠানেও রান্নায় পেঁয়াজ ব্যবহার করা হচ্ছে না। কিছু হোটেলে বোর্ড টাঙানো হয়েছে, পেঁয়াজ চেয়ে লজ্জা দেবেন না। এমন অবস্থায় প্রশাসনের আধিকারিকরা টহল দিচ্ছেন বিভিন্ন বাজারে। তাতে হয়তো কিছুটা হলেও দাম কমাতে বাধ্য
হচ্ছেন দোকানিরা।