মৃত তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্কর। —ফাইল চিত্র।
গত ১৩ নভেম্বর বাড়ির কাছে একটি মসজিদে নমাজ পড়তে যাওয়ার সময় দুষ্কৃতীদের গুলিতে মৃত্যু হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর থানার বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি সইফুদ্দিনের। পাঁচ দুষ্কৃতী মোটরবাইকে করে এসে গুলি ছোড়ে সইফুদ্দিনকে। পালানোর সময় এক জনকে ধরে ফেলেন জনতা। অভিযোগ, গণপিটুনির জেরে মৃত্যু হয় শাহবুদ্দিন লস্কর নামে ওই অভিযুক্তের। এক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর পর অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি হয়ে ওঠে বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের দলুয়াখাঁকি গ্রাম। প্রায় ২০-২৫ টি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় হামলাকারীরা। শুধু আগুন নয়, ২০-২৫টি বাড়িতে ব্যাপক লুটপাট চালানো হয়। তার পর গোটা গ্রাম কার্যত পুরুষশূন্য হয়ে যায়। গ্রামের মহিলা এবং শিশুরা আশ্রয় নেন দক্ষিণ বারাসাতের সিপিএমের দলীয় কার্যালয়ে। পরে তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। এ বার ওই খুনের ঘটনায় চতুর্থ গ্রেফতারি হল।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত রবিউল কামারিয়া এলাকার বাসিন্দা। সইফুদ্দিনের প্রতিবেশী ছিলেন তিনি। ধৃতের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তৃণমূল নেতাকে খুনের আগে যে সুপারি দেওয়া হয়েছিল সেখানে আর্থিক সাহায্য করেছিলেন তিনি। বস্তুত, পুলিশি তদন্তে ভাড়াটে খুনির তত্ত্ব উঠে এসেছে। তদন্তকারীদের দাবি, রবিউলকে খুনের জন্য প্রায় ৪ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল। অন্য দিকে, সইফুদ্দিনের খুনের ঘটনার পরেই গা ঢাকা দেন রবিউল।
এলাকায় বেশ কয়েকটি দোকান রয়েছে রবিউলের। কিছু দোকানঘর ভাড়াও দেন তিনি। তা ছাড়াও নিজের কিছু ব্যবসা রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, সইফুদ্দিনের সঙ্গে রবিউলের পুরনো শত্রুতা ছিল। তৃণমূল নেতার খুনের পর আর বাড়িতে দেখা যায়নি রবিউলকে। টানা খোঁজখবর চালানোর পর পুলিশ জানতে পারে, জয়নগরের পাশের থানা বকুলতলায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপন করেছিলেন অভিযুক্ত। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে তারা। তবে ওই ঘটনায় আরও বেশ কয়েক জন পলাতক বলে জানাচ্ছে পুলিশ। তাঁদের সন্ধান চলছে।