ধৃত শুভজিৎ চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র
আগেই উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল ল্যাপটপ। এর পরে ছিল বাড়ির ছাদে বা ফাঁকা জায়গায় মোবাইল টাওয়ার বসিয়ে উপার্জন এবং একইসঙ্গে চাকরির প্রতিশ্রুতিও। উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের একটি সংস্থার তরফে অমন লোভনীয় প্রস্তাবে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন সুন্দরবন কোস্টাল থানার কুমিরমারি গ্রামের বাসিন্দা রাকেশ মণ্ডল। দফায় দফায় সংস্থাকে কয়েক লক্ষ টাকাও কিছুই জোটেনি। টাকাও ফেরত পাননি। দ্বারস্থ হয়েছিলেন পুলিশের। প্রতারক শুভজিৎ চক্রবর্তী ধরা পড়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, শুভজিতের সঙ্গে তার মা বাবলি চক্রবর্তী ‘পাস রিটেল প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে ওই সংস্থা খুলে এই প্রতারণা চক্র চালাত। দু’জনেই ছিল সংস্থার ডিরেক্টর। দু’জনকেই একাধিকবার গ্রেফতার করা হয়েছে। রাজ্যের বহু থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে।
রাকেশের কাছ থেকে দফায় দফায় ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। মাসখানেক আগে ওই অভিযোগ দায়ের হয়। একই রকম ভাবে প্রতারণার অন্য একটি অভিযোগে দিন কয়েক আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনারই বকুলতলা থানা শুভজিৎকে গ্রেফতার করে। চার দিনের পুলিশ হেফাজতে তাকে সোমবার সুন্দরবন কোস্টাল থানায় আনা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
রাকেশ বলেন, “আমাকে একটি ল্যাপটপ দিয়ে ওরা জানিয়েছিল, আমার জমি মোবাইল টাওয়ার বসানোর জন্য বাছা হয়েছে। মাসে ৩০ হাজার টাকা ভাড়া পাব। ১০ হাজার টাকার নিরাপত্তারক্ষীর চাকরিও মিলবে। কিন্তু এরপরেই নানা ধরনের রেজিস্ট্রেশন ও ফি বাবদ আমার কাছে টাকা চায়। প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা দেওয়ার পর প্রতারিত হয়েছি বুঝতে পেরে থানায় অভিযোগ জানাই।”
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, কিছুদিন আগে বারাসতের ওই অফিস বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর পিছনে মূল মাথা শুভজিতের এক নিকাটাত্মীয়ের। তার বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরে। শুভজিৎরাও সোদপুরের বাসিন্দা। ওই অফিসে কয়েক জন যুবক-যুবতীকে নিয়োগও করা হয়েছিল। প্রথমে সংস্থার নাম করে বিভিন্ন লোকজনকে ফোন করে টাওয়ার বসানোর টোপ দেওয়া হত। কেউ প্রলোভনে পা দিলেই তাঁর ভরসা জেতার জন্য ওই প্রতারণা সংস্থার তরফে ল্যাপটপ, কম্পিউটার, সাউন্ড সিস্টেম, ইলেকট্রিক স্কুটির মতো লোভনীয় পুরস্কার দেওয়া হত। তারপরে রেজিস্ট্রেশন এবং বিভিন্ন ফি’র নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হত।