Crime

ভাড়া না পেয়ে ভাড়াটেকে আটক, ধৃত বাড়িওয়ালার ছেলে

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বিকাশ দাস নামে এক ব্যক্তি মাস চারেক আগে পূর্ব ঘোষপাড়ায় একটি ঘর ভাড়া নিয়েছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:১৩
Share:

প্রতীকী চিত্র।

বেতন আটকে যাওয়ার ফলে সময়মতো ভাড়া দিতে না পারায় ভাড়াটেকে সারা দিন ঘরে আটকে রাখার অভিযোগ উঠল বাড়িওয়ালা ও তার ছেলের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে সোনারপুর থানার পূর্ব ঘোষপাড়া এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় বাড়িওয়ালার ছেলে বাবুসোনা হালদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বিকাশ দাস নামে এক ব্যক্তি মাস চারেক আগে পূর্ব ঘোষপাড়ায় একটি ঘর ভাড়া নিয়েছিলেন। তিনি ওই অঞ্চলেরই সাহেবপাড়া এলাকার একটি পার্লারে কাজ করেন। করোনার বিধিনিষেধের জেরে গত সোমবার থেকে সেই পার্লার বন্ধ হয়ে যায়। বিকাশ জানিয়েছেন, প্রতি মাসের ৩ তারিখ ভাড়া দেন তিনি। কিন্তু আচমকা পার্লার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সময়মতো বেতন হয়নি তাঁর।

৪ জানুয়ারি, অর্থাৎ মঙ্গলবার সকালে বাড়িওয়ালা মোহন হালদার ও তার ছেলে বাবুসোনা ভাড়ার টাকা নিতে আসে। কিন্তু বেতন না পাওয়ায় বিকাশ তাঁদের জানান, ভাড়া দিতে কয়েক দিন দেরি হবে। অভিযোগ, সে কথা শোনার পরেই বিকাশকে ঘরে তালাবন্ধ করে আটকে রাখা হয়। বিকেল পর্যন্ত বাড়িওয়ালাকে অনেক অনুরোধ করেও প্রতিকার না হওয়ায় বিকাশ তাঁর মালিক পলাশ দাসকে ফোন করে বিষয়টি জানান। পলাশবাবু সোনারপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এর পরে পুলিশ সেখানে পৌঁছে রাত আটটা নাগাদ ঘরের দরজা ভেঙে বিকাশকে উদ্ধার করে। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে রাতেই বাবুসোনাকে গ্রেফতার করা হয়।

Advertisement

পলাশবাবু বলেন, ‘‘মাসিক ভাড়া ৪২০০ টাকা। একটিমাত্র ঘর। শৌচালয় ঘরের বাইরে। ভাড়া দিতে না পারায় প্রায় আট ঘণ্টা এক জনকে অমানবিক ভাবে আটকে রাখা হল! খাবার বা জলটুকুও দেওয়া হয়নি। এমনকি, শৌচাগারেও যেতে দেওয়া হয়নি। এরা কি মানুষ! পুলিশের সাহায্যে বিকাশকে উদ্ধার করা হয়েছে।’’

এই ঘটনার পিছনে সোনারপুরের এক শ্রমিক নেতার হাত রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। ওই নেতার মদতেই বিকাশকে আটকে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ। তদন্তকারীরা জানান, বাবুসোনাকে থানায় নিয়ে আসার পরে ওই নেতা একাধিক বার ফোন করে তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তিনি আপসে সমস্যার মীমাংসা করে দেবেন বলেও দাবি করেন। তবে ওই নেতার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, তোলাবাজি-সহ নানা রকম বেআইনি কাজে জড়িত ওই শ্রমিক নেতা। তাঁর বিরুদ্ধে কসবায় দেবাঞ্জন দেবের ভুয়ো প্রতিষেধক-কাণ্ডে জড়িত থাকারও অভিযোগ রয়েছে। এমন অমানবিক ঘটনায় মদত দেওয়া ও পুলিশি তদন্তে ব্যাঘাত ঘটাতে চাওয়ার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে সোনারপুর থানা সূত্রের খবর।

এই প্রসঙ্গে সোনারপুর দক্ষিণের বিধায়ক অরুন্ধতী মৈত্র (লাভলি) বলেন, ‘‘শাসকদলের ছত্রচ্ছায়ায় থাকা এই ধরনের কিছু নেতা নানা রকম অন্যায় কাজ করছেন বলে অভিযোগ আসছে। পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করে আইনি পদক্ষেপ করবে। দলের তরফে এমন কাজ মেনে নেওয়া হবে না।’’

মঙ্গলবার রাতের পর থেকে বিকাশ তাঁর মালিক পলাশবাবুর ঘাসিয়াড়ার বাড়িতে রয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement