প্রতীকী ছবি।
দৈনিক করোনা সংক্রমণ কখনও একশোর নীচে নামছে। কখনও আবার তা একশো ছাড়িয়ে যাচ্ছে। কিন্তু মৃত্যুর ঘটনা ঘটেই চলেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায়। মঙ্গলবারও রাজ্যের মধ্যে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যার শীর্ষে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ৪ অগস্ট থেকে ১০ অগস্ট— এই সাতদিনে জেলায় করোনায় মারা গিয়েছেন ২১ জন। এই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬৩২ জন। মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলায় অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ১২১৩ জন। করোনা হাসপাতালগুলিতে এখন শয্যা বেশির ভাগই ফাঁকা থাকছে। বারাসত জেলা হাসপাতালে ৩০০ শয্যার মধ্যে এখন করোনা রোগী ভর্তি ২ জন। বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ২৫০ শয্যার মধ্যে রোগী ভর্তি থাকছেন ১৫-২০ জন। অন্য হাসপাতালগুলির একই পরিস্থিতি।
বারাসত জেলা হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল অবশ্য বলেন, ‘‘ঢিলেমির কোনও জায়গা নেই। আরও কিছুদিন মানুষকে সতর্ক ভাবে চলতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি কড়া ভাবে মানতে হবে। না হলে সংক্রমণ যদিও বা কমছে, ফের বাড়তে কিন্তু সময় লাগবে না।’’
কেন মৃত্যু চলছে? চিকিৎসকেরা মনে করছেন, করোনা ধরা পড়ার পরে অনেকেই প্রথমে হাসপাতালে আসছেন না। নিজেরা ওষুধ কিনে খাচ্ছেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁরা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন বা চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছেন। ফলে মৃত্যু হচ্ছে। আবার করোনার উপসর্গ নিয়েও মানুষ পরীক্ষা করাচ্ছেন না। নিজেরা ওষুধ খাচ্ছেন। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘এখন মূলত কো-মর্বিডিটি থাকা মানুষ করোনায় মারা যাচ্ছেন। অনেকে করোনা হয়ে হাসপাতালে এসে তাঁর কো-মর্বিডিটির কথা জানাচ্ছেন না। বাড়িতে কী ওষুধ খেতেন, তা-ও চিকিৎসকেরা জানতে পারছেন না। ফলে চিকিৎসায় কোনও ক্ষেত্রে খামতি থেকে যাচ্ছে।’’
জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা বলেন, ‘‘মানুষ যাতে মাস্ক পরেন, তা নিশ্চিত করতে ব্লক প্রশাসন, পুরসভা, পুলিশ এক সঙ্গে কাজ করছে। পুলিশ নিয়মিত ধরপাকড় করছে। মনে রাখতে হবে, ভ্যাকসিন-পর্ব শেষ না হওয়া পর্যন্ত মাস্ক পরতেই হবে। দ্বিতীয় ঢেউ এখনও শেষ হয়নি।’’ তিনি জানান, জেলায় গ্রামীণ এলাকার তুলনায় শহর অঞ্চলে সংক্রমণের হার বেশি। কারণ, শহর এলাকার লোকজন বাইরে বেশি যান। বাইরে থেকেও লোকজন আসেন।