—প্রতীকী চিত্র।
পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের জমে থাকা টাকা খরচের ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা জেলাগুলির মধ্যে অন্যতম উত্তর ২৪ পরগনা। তা দ্রুত খরচ করতে কোমর বেঁধে নেমেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন।
এখানে জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি এবং পঞ্চায়েত— তিনটি স্তর মিলিয়ে কত কোটি টাকা খরচ হয়নি, সেই তথ্য জেলা প্রশাসন সূত্রে মেলেনি। তবে, জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘উত্তর ২৪ পরগনা অনেক বড় জেলা। সেই সঙ্গে ভোট ছিল। তাই টাকা লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী খরচ করা যায়নি। তবে এ বার যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করা হচ্ছে। আশা করা যায়, বেশিরভাগ টাকা এক মাসের মধ্যে খরচ হয়ে যাবে।’’ জেলাশাসক শরদ কুমার ত্রিবেদী ইতিমধ্যেই জেলার বিভিন্ন জায়গায় পরিদর্শনে গিয়েছেন, যাতে কাজে গতি আসে।
গ্রামে পরিকাঠামোগত সমস্যা বহু। অথচ, কেন্দ্রের পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা খরচ করতে বিভিন্ন জেলায় ঢিলেমির তথ্য সামনে এসেছে। গত সেপ্টেম্বর মাসে রাজ্য সরকার নির্দেশ দেয়, ২১টি জেলা মিলিয়ে দৈনিক ৬০ কোটি টাকা খরচ করতে হবে। সম্প্রতি রাজ্য সরকার খতিয়ে দেখে, দৈনিক খরচের গড় লক্ষ্যমাত্রা থেকে বহু দূরে। এই অঙ্ক সাকুল্যে ১৬.৬৩ কোটি টাকা।
জেলা প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন পঞ্চায়েতেই অব্যবহৃত টাকার পরিমাণ ৩৫ থেকে ৪৫ লক্ষ টাকা করে। বিভিন্ন পঞ্চায়েত সমিতিতে কোটির বেশি টাকা পড়ে। সন্দেশখালি ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রৌফান ইয়াসমিন বিবি জানান, এখানে ওই তহবিলের এক কোটি টাকার বেশি আছে। ভোটের জন্য কিছু দিন কাজ বন্ধ ছিল। এখন ব্লক জুড়ে ৩০টি জায়গায় বিভিন্ন কাজ হচ্ছে। দু’মাসের মধ্যে টাকা খরচ করা যাবে।
এই ব্লকের কোরাকাটি পঞ্চায়েতে প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা পড়ে রয়েছে বলে খবর। এখানেও কাজ শুরু হয়েছে। এই পঞ্চায়েতে পরিকাঠামোগত নানা সমস্যা আছে। যেমন, ধুচনিখালি ৫ নম্বর চক থেকে উত্তর কোরাকাটি উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার ইটের রাস্তা বেহাল। রাস্তাটি ১৯৮২ সালে তৈরির পরে সংস্কার হয়নি। অথচ, রাস্তাটি স্থানীয়দের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। একই দশা পূর্ব কোরাকাটি জুনিয়র বেসিক স্কুলে যাওয়ার রাস্তার। এমন রাস্তা এই পঞ্চায়েতে আরও আছে। তুষখালি রামকৃষ্ণ এসএসকে-সহ বেশ কিছু স্কুলে মিড ডে মিল খাওয়ার ঘরের ছাউনি নেই। ফলে, ছেলেমেয়েদের সমস্যা হয়। এলাকার কোনও রাস্তায় পর্যাপ্ত আলো নেই। বহু জায়গায় কংক্রিটের নালা, সাঁকো প্রয়োজন। অনেক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ঘর নেই। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বেহাল অবস্থা। একই পরিস্থিতি অন্যান্য ব্লকেও।
হিঙ্গলগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির কাছে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা টাকা পড়ে রয়েছে। তমিচির সভাপতি সইদুল্লা গাজির দাবি, কয়েকটি কাজ শুরু হয়েছে। দ্রুত শেষ হবে। তবে বৃষ্টির জন্য কিছু কাজে কয়েক মাস দেরি হবে। এই ব্লকের গোবিন্দকাটি, দুলদুলি, রূপমারি পঞ্চায়েতে গড়ে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা করে আছে। পঞ্চায়েতগুলির দাবি, কাজ চলছে।
সন্দেশখালি ১ ব্লক সূত্রে খবর, এখানকার পঞ্চায়েতগুলি মিলিয়ে অন্তত ১ কোটি টাকা খরচ হয়নি। পঞ্চায়েত সমিতির কাছেও অন্তত ১ কোটি টাকা আছে। বিডিও সায়ন্তন সেন জানান, দ্রুত কাজ শেষ করতে চেষ্টা চলছে।