—প্রতীকী চিত্র।
দীর্ঘ দিন ধরে উত্তর ২৪ পরগনার গ্রামীণ এলাকার বেশ কিছু হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ। কোনওটির ভগ্নদশা, কোনওটির ভবন তৈরি হয়েও পড়ে রয়েছে। কোথাও আবার পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ বিস্তর। সার্বিক এই ‘অব্যবস্থা’ দূর করে গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর হাল ফেরাতে উদ্যোগী হল জেলা পরিষদ। এ জন্য স্বাস্থ্য দফতরে তদ্বিরেও জোর বাড়ানো হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানানো হয়েছে, সব বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করতে আগামী ২৯ নভেম্বর জেলা পরিষদ ভবনে বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও জেলা প্রশাসনের কর্তারাও উপস্থিত থাকবেন।
জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ অজিত সাহা বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর আরও উন্নতি করে গ্রামবাসীদের আরও বেশি করে উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া।’’
বাগদা ব্লকের সিন্দ্রাণী গ্রামীণ হাসপাতালের বেহাল চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে এলাকার মানুষ দীর্ঘ দিন ধরেই ক্ষুব্ধ। বহু বছর আগে এখানে রোগীকে ভর্তি রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা ছিল। ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসা পরিষেবা মিলত। প্রসবেরও ব্যবস্থা ছিল। সে সব এখন অতীত।
অভিযোগ, অনেক বছর হল চিকিৎসা পরিষেবা তলানিতে এসে ঠেকেছে। হাসপাতালের পুরনো জরাজীর্ণ ভবনের পরিবর্তে কয়েক বছর আগে নতুন ভবন তৈরি করা হয়। সেখানে নতুন কিছু শয্যাও এনে রাখা হয়েছিল। গ্রামবাসীরা আশা করেছিলেন, আবার হয়তো রোগী ভর্তি শুরু হবে। ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা থাকবেন। সে সব কিছুই চালু হয়নি। উল্টে নতুন ভবনটিও ধীরে ধীরে খারাপ হতে শুরু করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা তথা স্কুল শিক্ষক শুভঙ্কর সাহা বলেন, ‘‘এখন সপ্তাহে ৫ দিন কয়েক ঘণ্টার জন্য চিকিৎসক এখানে বর্হিবিভাগে রোগী দেখেন। আর কোনও পরিষেবা মেলে না। আমরা চাই, নতুন ভবনটিও মেরামত করে দ্রুত ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসা পরিষেবা চালু করা হোক।’’
সিন্দ্রাণী থেকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালের দূরত্ব ৩০ কিলোমিটার। বাগদা গ্রামীণ হাসপাতাল ১৭ কিলোমিটার। রাতে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নিয়ে যেতে গাড়ি পেতে বিস্তর কাঠখড় পোড়াতে হয় সিন্দ্রাণীর বাসিন্দাদের।
গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালটির অবস্থাও তথৈবচ। গোবরডাঙা এবং সংলগ্ন এলাকার কয়েক লক্ষ মানুষ ওই হাসপাতালের উপরে নির্ভরশীল। জেলা পরিষদ পরিচালিত হাসপাতালটিতে রোগী ভর্তি বন্ধ হয়ে গিয়েছে ২০১৪ সালের নভেম্বর মাস থেকে। তারপর থেকে হাসপাতালের বহির্বিভাগে খুঁড়িয়ে চলছিল। গত জানুয়ারিতে সেটাও বন্ধ হয়ে যায়। এলাকার মানুষ দীর্ঘ দিন ধরেই
এটিকে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল হিসাবে চালুর দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন।
অজিত জানান, গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালটি যাতে স্বাস্থ্য দফতর অধিগ্রহণ করে চালু করে সে জন্য জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে আগে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। ফের আবেদন করা হবে। সিন্দ্রাণী গ্রামীণ হাসপাতালটিতেও পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা পরিষেবা দিতে পদক্ষেপ করা হবে। এ ছাড়া, জেলায় বেশ কিছু সু-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবন তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। সেগুলি দ্রুত উদ্বোধন করে পরিষেবা চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।