যে-যা-বলুক: পুজো উদ্বোধনে ঠাসাঠাসি ভিড়। অনুষ্ঠানে হাজির তৃণমূলের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা নেতারা। আছেন পুলিশ কর্তারাও। বুধবার সন্ধ্যায় ক্যানিংয়ে ছবিটি তুলেছেন প্রসেনজিৎ সাহা
নড়চড় হয়নি আদালতের রায়। অঞ্জলি, সিঁদুর খেলাও বন্ধ রাখতে হচ্ছে। তবে শেষমেশ পুজোর দিনগুলিতে ভিড় নিয়ন্ত্রণ কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। কারণ, বড় পুজো কমিটিগুলির অনেকে এ দিনও মণ্ডপের সামনে ব্যারিকেড করার কথা বলেই কার্যত দায় সেরেছে। দর্শককে মণ্ডপে ঢুকতে না দেওয়াই যেন এখন পুলিশ-প্রশাসনেরও মূল লড়াই। কিন্তু মণ্ডপের সামনে হোক কিংবা পথে— জনতার ঢলকে কী ভাবে দূরত্ববিধি মানানো যাবে, তার স্পষ্ট দিশা নেই কারও কাছে। রাজ্য সরকার মুখে যা-ই বলুক, ভিড় নিয়ন্ত্রণে কতটা সদিচ্ছা আছে তাদের, সে প্রশ্নটাও ঘুরে ফিরে আসছে। কারণ, সরকারের নেতামন্ত্রীরা যে কথা বলছেন, যা করছেন, তাতে হাইকোর্টের রায় কতটা মান্যতা পাচ্ছে, তা নিয়ে সন্দিগ্ধ সচেতন নাগরিক সমাজ।
এ দিনই ক্যানিংয়ে দু’টি পুজোর উদ্বোধনে কয়েক হাজার মানুষের জমায়েতে সামিল থেকেছেন তৃণমূল নেতারা। ছিলেন পুলিশ কর্তারাও।
ক্যানিং মিঠাখালি সর্বজনীন ও ক্যানিং হাসপাতালপাড়া সর্বজনীনের পুজো উদ্বোধনে মণ্ডপের সামনেই গাদাগাদি ভিড় হয়ে যায়। মঞ্চে তখন বসে নেতারা। মিঠাখালির অনুষ্ঠানে মঞ্চে ছিলেন সাংসদ তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তী, আইসি আতিবুর রহমান, দলের নেতা পরেশরাম দাস, শক্তিপদ মণ্ডল প্রমুখ। করোনা-সচেতনতা নিয়ে বক্তৃতা করেন সকলেই। আদালতের নির্দেশ মেনে চলার কথাও বলেন। কিন্তু ভিড় নিয়ন্ত্রণের কৌশল নিয়ে কারও মুখে কিছু শোনা যায়নি। হাবড়ায় এ দিন এক দলীয় কর্মসূচিতে এসে স্থানীয় বিধায়ক তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক পুষ্পাঞ্জলি না দিতে পারার আক্ষেপ গোপন করেননি। তিনি এ-ও বলেন, ‘‘উচ্চ আদালতের রায় আমরা মাথা পেতে গ্রহণ করেছি। কিন্তু যাঁরা আদালতে গেলেন, তাঁরা বুকে হাত দিয়ে বলুন তো, এই পুজো বন্ধ করে দেওয়ার একটা গভীর চক্রান্ত ছিল কিনা। এ বছর বাংলার এই উৎসবটা বন্ধ হয়ে যাক, তাঁরা চেয়েছিলেন। লজ্জার সঙ্গে বলছি, অনেক রাজনৈতিক নেতাদের বলতে শুনেছি, এই বছরটা দুর্গা উৎসব না করাই ভাল।’’ আদালতের রায় মানলেও এ কথা উঠছে কেন, তা অবশ্য ব্যাখ্যা করেননি মন্ত্রী। তবে এ দিন আদালতের রায় কার্যকর করা নিয়ে বনগাঁর পুজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে পুলিশ। বুধবার রাতের মধ্যে মণ্ডপের সামনে ব্যারিকেড তৈরির কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পুলিশের পক্ষ থেকে তা খতিয়ে দেখা হবে। শারদ সম্মানের বিচার প্রক্রিয়া এ বার বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে বনগাঁ পুলিশ। ডায়মন্ড হারবার শহরের ছোট-বড় পুজোগুলির ক্ষেত্রে ব্যারিকেড তৈরির উদ্যোগ চোখে পড়ল না বুধবারও। পুলিশ জেলার সূত্রে জানানো হয়েছে, মণ্ডপগুলি নিয়ম মানছে কিনা, তার উপরে নজর থাকবে।