প্রতীকী চিত্র
ভাটপাড়া ভাটপাড়া পুরসভায় আজ, শুক্রবার পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার কথা তৃণমূল কাউন্সিলরদের। তার আগের সন্ধ্যায়, বৃহস্পতিবার স্থানীয় বিধায়ক পবন সিংহকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ার অভিযোগ উঠল। এ দিন সকাল থেকে আবার থেকে পুরসভার সামনে বকেয়া পেনশনের দাবিতে অবস্থান শুরু করেছেন কিছু অবসরপ্রাপ্ত পুরকর্মী। পুরকর্মী বা কাউন্সিলরেরা কেউ-ই কাজে যোগ দিতে পারেননি। শুক্রবারও তাঁরা গেট আটকে বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
সব মিলিয়ে অনাস্থা আনা নিয়ে নিয়ে উত্তেজনার বাতাবরণ তৈরি হয়েছে ভাটপাড়ায়।বৃহস্পতিবার বিকেলে ভাটপাড়ার কলাবাগান এলাকায় বিজেপির একটি দলীয় কার্যালয় তৃণমূল দখলের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। বোমাবাজি হয়। সে সময়ে ওই পার্টি অফিসে গিয়েছিলেন ভাটপাড়ার বিধায়ক তথা সাংসদ অর্জুন সিংহের ছেলে পবন। বোমায় অবশ্য জখম হননি কেউ। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলই এলাকায় সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করতে বোমাবাজি করেছে। সে কথা মানেননি তৃণমূল নেতৃত্ব। পার্টি অফিস দখলের চেষ্টার কথাও অস্বীকার করেছেন। শাসক শিবিরের পাল্টা অভিযোগ, অনাস্থা ঠেকাতে বিজেপি নিজেদের লোক দিয়ে এলাকায় উত্তেজনা তৈরির চেষ্টা করছে। সে কথা আবার মানেনি বিজেপি। পবন বলেন, ‘‘পার্টি অফিস দখলের চেষ্টা হচ্ছে জেনে আমি গিয়েছিলাম। যাওয়া মাত্র দু’টি বোমা ছোড়া হয়। তার মধ্যে একটি ফাটেনি।’’ ঘটনার পরে ভাটপাড়া এবং জগদ্দল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
এর আগে সকালের দিকে পুরসভার গেটে পেনশন প্রাপকদের আন্দোলনকে ঘিরে বিতর্ক ছড়িয়েছে। আন্দোলনকারীদের বেশিরভাগই সিপিএম প্রভাবিত পেনশনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে যুক্ত। এ দিন পুরসভার গেট বন্ধ করে সকাল থেকে আন্দোলন শুরু করেন তাঁরা। কর্মী বা কাউন্সিলর-পুরপ্রধান কেউ-ই ঢুকতে পারেননি। কার্যত অচল হয়ে যায় পুরসভা। আন্দোলনকারীদের পক্ষে পরেশ পাল বলেন, ‘‘আমরা দু’মাস ধরে পেনশন পাচ্ছি না। এ দিন কাউকে পুরসভায় ঢুকতে দিইনি। শুক্রবারও দেব না।’’
তৃণমূলের একাংশের দাবি, বিজেপিই তাঁদের উস্কানি দিয়ে আন্দোলনে নামিয়েছে। শুক্রবার বিজেপির পুরপ্রধান সৌরভ সিংহের বিরুদ্ধে অনাস্থা দিতে যাবেন তৃণমূল কাউন্সিলররা। ওই দিনও আন্দোলনকারীদের সামনে রেখে গেট বন্ধ করে অচলাবস্থা তৈরির ছক কষেছে বিজেপি। সে কথা মানেনি পদ্মশিবির। আন্দোলনের পিছনে বিজেপির ‘উস্কানি’ আছে বলে মানতে নারাজ অবসরপ্রাপ্ত ওই কর্মীরাও। পরেশ বলেন, ‘‘আমরা জানি না তৃণমূল আসবে কিনা। এ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি।’’
লোকসভা ভোটের পর পর অর্জুনের জয়ে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল জুড়েই শক্তিবৃদ্ধি হয়েছিল বিজেপির। পাঁচটি পুরসভা তৃণমূলের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয় তারা। পরে অবশ্য পাল্টা কামড় বসিয়েছে ঘাসফুল শিবির। পাঁচটির মধ্যে চারটি পুরসভাতেই ক্ষমতায় ফিরেছে তারা। বাকি আছে শুধু ভাটপাড়া। যা অর্জুনের খাসতালুক বলেই পরিচিত দীর্ঘ দিন ধরে। এই পুরসভা তাদের হাতে আসা শুধু সময়ের অপেক্ষা, দাবি তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিকের।
ভাটপাড়ার ক্ষমতা ধরে রাখা অর্জুনের কাছে সম্মানের লড়াই। আত্মবিশ্বাসের সুর তাঁর গলাতেও। বৃহস্পতিবার অর্জুন বলেন, ‘‘ভাটপাড়ায় ক্ষমতা কার হাতে থাকে, তা সময়ই বলবে। অনাস্থা নিয়ে ভাবছি না।’’