ছাত্রের মৃত্যুতে শোকাহত পরিজনেরা। ছবি: সুজিত দুয়ারি। ইনসেটে, স্বাগত বণিক।
ছেলে সময় মতো বাড়ি না ফেরায় শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। সমাজমাধ্যমে লেখালিখিও শুরু করেন বন্ধুরা। শেষমেশ খবর আসে, ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গিয়েছেন স্বাগত বণিক ওরফে শুভ।
উত্তর হাবড়া এলাকার বাসিন্দা স্বাগতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মোবাইল বাড়িতে ফেলে রবিবার বেরিয়েছিলেন স্বাগত। সেখান থেকে তিনি কী ভাবে ১১৮ কিলোমিটার দূরে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় পৌঁছলেন, তা নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে। একমাত্র সন্তানের মৃত্যুতে মা-বাবা শোকস্তব্ধ। আত্মীয়-পড়শিরাও বিহ্বল। স্বাগতের বাবা গৌতমের বক্তব্য, “যদি মরতেই হত, তা হলে বাড়ি থেকে এত দূরে গিয়ে কেন? কলেজের বন্ধুরা এর সঙ্গে জড়িত।”
একই সুর শোনা গেল স্বাগতের পিসতুতো দিদি অপর্ণা দেবের মুখেও। তিনি বলেন, “ভাইয়ের মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী, পুলিশ তাদের খুঁজে বের করুক। পাঁশকুড়ায় আমাদের কোনও আত্মীয় থাকেন না, ওর কোনও বন্ধু থাকে বলেও শুনিনি। তা হলে ও ওখানে গেল কী ভাবে? ওর ফোনের কললিস্ট পাওয়া গেলেও হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজ সব ডিলিট করা ছিল। এই ঘটনার পিছনে কলেজের কিছু বন্ধু জড়িত। আমরা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার। ভাইয়ের কাছে নগদ টাকা ছিল না। পাঁশকুড়ায় যাওয়ার টাকা কোথায় পেল ও— এ সব প্রশ্নের উত্তর চাই আমরা।”
মঙ্গলবার দেহ ফেরার পরে পাড়া-পড়শিরা ভিড় করেছেন বাড়িতে। তাঁদেরই এক জন সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, “এত দূরে গিয়ে কেন কেউ আত্মহত্যা করবে?
স্বাগত খুব ভাল ছেলে ছিল। ওর কোনও শত্রু থাকতে পারে আমরা ভাবতেই পারছি না। পুলিশ উপযুক্ত তদন্ত করুক।”
গৌতম বলেন, “বাড়িতে কোনও অশান্তি ছিল না। ওর সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশতাম। রবিবার বাড়ি থেকে বেরনোর সময়ে ছেলেকে টাকা লাগবে কি না জিজ্ঞেস করেছিলাম। কিছু লাগবে না বলল।”