মুড়িগঙ্গা নদীতে ড্রেজিং চলছে। ছবি: সমরেশ মণ্ডল।
মুড়িগঙ্গা নদীতে নতুন করে জেগে ওঠা চর গঙ্গাসাগর মেলার আগে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রশাসনের। ওই চর কাটতে ফরাক্কা থেকে ড্রেজ়িং মেশিন আনছে জেলা প্রশাসন। দু’এক দিনের মধ্যেই ওই চরের মাটি কাটার কাজ শুরু হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। বুধবার নবান্নে গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর দশেক আগে মুড়িগঙ্গা নদীতে একটি বাংলাদেশি জাহাজ ডুবে যায়। সেই ডুবে যাওয়া জাহাজটিকে কেন্দ্র করেই কচুবেড়িয়ার কাছে জেগে উঠেছে চর।
বৈঠকে বিষয়টি শুনে মুখ্যমন্ত্রী দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেন। ডুবে যাওয়া জাহাজটি তোলার জন্য সেনাবাহিনীর সাহায্য নেওয়া যায় কি না, তা-ও খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে, বৈঠকে উপস্থিত বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকরা জানান, এই ধরনের কাজ করার জন্য ড্রেজ়িং কর্পোরেশনকে চিঠি লিখে আবেদন করা যেতে পারে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, মেলা শেষ হলে জাহাজটি তোলার কাজ হবে। আপাতত যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে, তা দেখার জন্য নির্দেশ দেন তিনি।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, আপাতত মেলার আগে চরের পলি-বালি সরানোর ব্যবস্থা হবে। জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো ফরাক্কা থেকে বিশেষ ধরনের ড্রেজ়ার নিয়ে আসা হচ্ছে। এই ড্রেজ়ার দিয়েই ওই চরের পলি-বালি সরানো হবে। আগামী দু’এক দিনের মধ্যে কাজ শুরু হয়ে যাবে। পাঁচ দিনের মধ্যে কাজ শেষ হবে।”
মেলার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাগরে আসতে পারেন বলে প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে। জোরকদমে চলছে মেলার প্রস্তুতি। জেলা প্রশাসনের দাবি, এ বছর প্রায় ৪০ লক্ষ পুণ্যার্থী মেলায় আসতে পারেন।
কটালে কপিলমুনি মন্দিরের কাছেই সমুদ্রতটে ধস নেমেছিল। নতুন করে সমুদ্রতট বানানো হয়েছে। মন্দিরে নতুন রঙের পোচ পড়েছে। কচুবেড়িয়া বাস স্ট্যান্ড ও গঙ্গাসাগর বাস স্ট্যান্ড থেকে মেলা চত্বরে ১ থেকে ৫ নম্বর রাস্তা আলোয় সেজে উঠেছে।
পরিবেশবান্ধব মেলা করার লক্ষ্যে আবারও প্লাস্টিক বর্জনের উপর জোর দিচ্ছে গঙ্গাসাগর-বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ। পর্ষদের আধিকারিক নীলাঞ্জনা তরফদার বলেন, “এ বছরও সম্পূর্ণ প্লাস্টিকমুক্ত মেলার পরিকল্পনা করা হয়েছে। মেলা চত্বর পরিষ্কারের জন্য তিন হাজার সাগর-প্রহরী থাকবে। এ ছাড়া, পুণ্যার্থীদের বিনামূল্যে শালপাতার প্লেট, বাটি বিতরণ করা হবে। মেলার সব দোকানেও তা দেওয়া হবে।”
সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী তথা সাগরের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে মেলায় সব ধরনের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। নতুন করে সমুদ্রতট তৈরি করা হয়েছে। প্রস্তুতি প্রায় শেষের দিকে।”