অভিজিৎ বন্দোপাধ্যায় এবং জাহাঙ্গির খান। নিজস্ব চিত্র
ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা নিয়ে এবার রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্রকে নোটিসে পাঠিয়েছে জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন। নোটিসে ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার এসপি অভিজিৎ বন্দোপাধ্যায়, যুব তৃণমূল নেতা জাহাঙ্গির খান, ফলতা থানার আইসি অভিজিৎ হাইত এবং পুলিশ অফিসার রফিকুজ্জামান শেখ ও সুমন বগির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে কমিশন।
যদিও, এসপি অভিজিৎ সোমবার দুপুরে জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত এই ধরনের কোনও নোটিস তাঁর কাছে এসে পৌঁছয়নি।
নোটিসে জানানো হয়েছে ভোটের ফল প্রকাশের পর ফলতায় পুলিশের সহযোগিতায় জাহাঙ্গির এবং তাঁর অনুগামীরা বহু বাড়িতে হামলা চালায়। পরিবারের বয়স্কদের পাশাপাশি শিশুদের উপরেও অত্যাচার চালানো হয়। এই ঘটনায় দ্রুত তদন্তের পাশাপাশি অভিযুক্ত অফিসারদের বিরুদ্ধে ‘সার্ভিস রুল’ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলেছে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন। এ বিষয়ে ৭ দিনের মধ্যে রিপোর্ট তলব করা হয়ছে। পাশাপাশি, কমিশন আরও জানিয়েছে, বিশেষ জুভেনাইল পুলিশ অফিসারকে আক্রান্ত শিশুদের বয়ান রেকর্ড করে কমিশনে পাঠাতে হবে।
কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, মহারাষ্ট্রের রত্নগিরি জেলার বাসিন্দা মৈত্রী জোশী ফলতা বিধানসভা জুড়ে চলতে থাকা ভোট পরবর্তী রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা তুলে ধরে কেন্দ্রীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনে অভিযোগ পত্র পাঠিয়েছিলেন। অভিযোগ পত্রে তিনি লেখেন, ভোটের আগে ডায়মন্ড হারবারের এসপি অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরিয়ে দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু গত ২ মে, ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর নতুন সরকার গঠিত হলে অভিজিৎকে ফের ডায়মন্ড হারবারে ফিরিয়ে আনে রাজ্য। এরপর কার্যত ফলতার যুব তৃণমূল নেতা জাহাঙ্গিরের নির্দেশে কাজ করছিলেন এসপি অভিজিৎ। মদত দেন বিরোধীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক হিংসায়।
অভিযোগ, জাহাঙ্গিরের নির্দেশেই ফলতার রামনগর থানার পুলিশ এবং তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা খোর্দো-নালা গ্রামে অভিযান চালিয়ে শিশু ও মহিলাদের বেধড়ক মারধর করে। পাশাপাশি, ২৭ জনকে মিথ্যে অভিযোগে ফাঁসিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। ৬০০-এর বেশি পরিবার ঘর ছাড়া হয়। সাড়ে তিনশোর বেশি বাড়িতে লুঠ ও ভাঙচুরের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয় হয় বলেও অভিযোগ। ঘটনার জেরে শতাধিক শিশু অনাহারে রয়েছে। এসপির সহযোগিতায় জাহাঙ্গিরের কাজকর্মের জের ওই শিশুরা মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে কমিশনের কাছে।
তবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বিজেপি-র মদতে এই নোটিস পাঠানো হয়েছে বলে দাবি তৃণমূলের। এ বিষয়ে ফলতার যুব তৃণমূল সভাপতি জাহাঙ্গির বলেন, ‘‘ভোটে বহু ব্যবধানে হেরেছে বিজেপি। তাই এখন কমিশনকে কাজে লাগিয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু মিথ্যে অভিযোগ করে কোনও লাভ হবে না। এলাকার মানুষ এবং শিশুরা নিরাপদেই আছেন।’’