—প্রতীকী ছবি।
মেয়ের বিয়ের পর বৌভাতের রাতেই মারা গেলেন বাবা। তাঁর সৎকারের জন্য এগিয়ে এলেন এলাকার মুসলিম যুবকেরা। সম্প্রীতির এমন নজির গড়লেন ভাঙড়ের কাশীপুর থানার সর্দারপাড়ার বাসিন্দারা।
বুধবার ভোরে এলাকার বাসিন্দা পরাণ দাস (৫০) মারা যান। বেশ কিছু দিন ধরে তিনি শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। গত পাঁচ বছর ধরে প্যারালিসিস ছিল তাঁর। হাঁটাচলা করতে পারতেন না। দশ বছর আগে স্ত্রী ছেড়ে চলে যান। একমাত্র মেয়ে রুম্পাই বাবার দেখাশোনা করতেন।
সোমবার রাতে রুম্পার বিয়ে হয়। এ দিন রাতে ছিল বৌভাত। রাত ৩টে নাগাদ পরাণের হঠাৎ শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। মারা যান।
গরিব পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর মতো আর্থিক সামর্থ্য ছিল না আত্মীয়স্বজনদের। খবর পেয়ে চলে আসেন স্থানীয় মুসলিম যুবকেরা। আব্দুর রহিম মোল্লা, হাসানুর রহমান, সহিদুল মোল্লা, সহাদ বক্স সর্দার, ফারুক মোল্লা-সহ অনেকে উদ্যোগীহয়ে পরাণের দেহ শ্মশানে নিয়ে যান। অন্ত্যেষ্টির যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করেন।
রুম্পা বলেন, ‘‘বাবার মৃত্যুর পরে কী ভাবে শেষকাজ করে উঠতে পারব, বুঝতে পারছিলাম না। পরিবারের তেমন কেউ পাশে দাঁড়ানোর মতো নেই। বিপদের সময়ে যে ভাবে মুসলিম ভাইয়েরা পাশে দাঁড়িয়েছেন, সে জন্য কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই।’’
আব্দুর রহিম মোল্লা বলেন, ‘‘পরাণ আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু। তাঁর পরিবারের বিপদের দিনে পাশে দাঁড়ানোটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্যের পড়ে। আমরা এখানে হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে ভেদাভেদ করি না। একে অন্যের বিপদে ছুটে যাই।’’