অর্জুন সিংহ। —ফাইল চিত্র।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় আবার একটা খুন। আবার শুরু রাজনৈতিক চাপানউতর। বার বার একই রকমের ঘটনায় রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনের নিন্দায় সরব হলেন ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহ। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এত বোমা আসছে কোথা থেকে? পুলিশের অজ্ঞতার কারণেই এত বোমার বাড়বাড়ন্ত।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বোমার হদিস পাওয়ার যোগ্যতা এক জন কনস্টেবলের নেই।’’
বিজেপির টিকিটে জয়ী হলেও এখন তৃণমূলে রয়েছেন সাংসদ অর্জুন। রাজনৈতিক খুনের ঘটনায় আগেও তিনি পুলিশ-প্রশাসনকে একহাত নিয়েছেন। এ নিয়ে বিঁধতে ছাড়েনি বিরোধীরা। তাঁদের কটাক্ষ, রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী যেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং, সেখানে অর্জুনের এই নিশানা তাৎপর্যপূর্ণ। আমডাঙা পঞ্চায়েতের প্রধান রূপচাঁদ মণ্ডলের খুনের ঘটনায় অর্জুন টেবিল ঠুকতে ঠুকতে বলেন, ‘‘বোমা তৈরির এই সিস্টেম না বন্ধ হলে রোজ এই রকম ঘটনা ঘটবে। বোমা তৈরি এখন সামাজিক সমস্যা। এখন কিছু লোকের এটাই ব্যবসা।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এখন একটা বোমার কত দাম হবে? হাজার টাকা। পাঁচশো টাকাতেও পাওয়া যায়। কিছু লোক বানিয়ে রাখে। সেগুলো চুরি করেও বিক্রি হয়। সস্তায় পাওয়া যায়। এটাও একটা ব্যবসা।’’
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ আমডাঙা থানার কামদেবপুর বাজার এলাকায় কিছু লোকজনের সঙ্গে দাঁড়িয়ে গল্প করছিলেন রূপচাঁদ। আচমকাই বোমা পড়তে থাকে সেখানে। জখম হন রূপচাঁদ। তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসার পরে পাঠানো হয় বারাসতের নার্সিংহোমে। পরে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। রূপচাঁদের উপরে হামলার প্রতিবাদে সন্ধ্যার পর থেকে তৃণমূলের লোকজন ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। ছেলের খুনের ঘটনায় রূপচাঁদের বাবা আঙুল তুলেছেন তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের দিকে। যদিও অর্জুন তা মনে করছেন না। তাঁর কথায়, ‘‘এফআইআরে চার জনের নাম আছে। পুলিশকে আমরা বলেছি, অভিযুক্তদের ধরতে। তার পর বোঝা যাবে খুনের কারণ।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘শত্রুতা ছাড়া খুন হয়নি। তবে এটা পরিকল্পিত খুন। এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। আগে থেকে ছক করে ‘প্রফেশনালি’ খুন করা হয়েছে। আর আমি মনে করি না, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কোনও ব্যাপার আছে।’’ উল্লেখ্য, আমডাঙায় তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন আনোয়ার হোসেন মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি। পুলিশ সূত্রে খবর, শাসকদলের নেতা খুন হওয়ার পরেই পরিবারের তরফে পুলিশে যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল, তাতে নাম ছিল আনোয়ারের। শুক্রবার আনোয়ারকে বারাসত আদালতে তোলা হলে তাঁর ৭ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।