জয়নগরে পুলিশের বাধার মুখে কংগ্রেস নেতারা। —নিজস্ব চিত্র।
জয়নগরের দোলুয়াখাকিতে ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার পথে এ বার বাধার মুখে পড়ল কংগ্রেসের প্রতিনিধি দলও। শুক্রবার দুপুরে গুদামের হাট এলাকায় কংগ্রেস নেতাদের আটকায় পুলিশ। তখন আইনের বই হাতে তাঁদের আটকানোর কারণ জানতে চান কংগ্রেস নেতারা। পাশাপাশি প্রতিবাদে রাস্তায় বসে পড়েন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা কংগ্রেসের নেতারা। এর আগে বাম প্রতিনিধি দল এবং ভাঙড়ের বিধায়ক তথা আইএসএফ নেতা নওশাদ সিদ্দিকেকে এলাকায় ঢুকতে দেয়নি প্রশাসন। পুলিশের যুক্তি, গ্রামে শান্তি বজায় রাখার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে, কংগ্রেসের অভিযোগ, সব কিছুকে রাজনৈতিক নজরে দেখা হচ্ছে। পুলিশ প্রশাসন নিরপেক্ষ নয়।
পুলিশি বাধায় আটকে গিয়ে রাজ্যের প্রদেশ কংগ্রেস সম্পাদক নেতা আশুতোষ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা আইনের বই নিয়ে দেখালাম। বললাম, কোথায় লেখা আছে বলুন। কোনও উত্তর দিতে পারল না (পুলিশ)। দুটো ইংরেজি শিখে এসেছে। সে গুলো বলছে। মানুষকে নিরাপত্তা দিতে পারছে না। এখন ত্রাণও দিতে দিচ্ছে না।’’ কংগ্রেসের অভিযোগ, আইন- শৃঙ্খলার অবনতির জন্য পুলিশই দায়ী। কংগ্রেসের ওই প্রতিনিধি দলে ছিলেন জয়ন্ত দাস, অসিত মিত্র, প্রতাপ মণ্ডল, আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়, সৌম্য আইচ রায় প্রমুখ।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে বারুইপুরের এসডিপিও অতীশ বিশ্বাস জানান, শুধু গ্রামের লোকেরাই গ্রামে থাকবেন। গ্রামে শান্তি বজায় রাখতে আপাতত বহিরাগত মানুষকে গ্রামে ঢুকতে দিচ্ছেন না তাঁরা।
অন্য দিকে, জয়নগরে তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় ধৃত আনিসুর রহমান লস্কর ও কামালউদ্দিন ঢালিকে বারুইপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে দু’জনকে ১১ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয়। যদিও তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন খুনের ঘটনায় মুখে কুলুপ এঁটেছেন দুই অভিযুক্তই। আনিসুর এবং কামালউদ্দিন ধরা পড়েন বৃহস্পতিবার। পুলিশের দাবি, তৃণমূল নেতাকে গুলি করার দায়িত্ব ছিল ধৃত শাহরুল শেখ এবং গণপ্রহারে মৃত শাহাবুদ্দিনের উপর। তবে খুনের গোটা পরিকল্পনা করেন আনিসুর। তাঁকে এবং শাহরুলকে জেরা করে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে এসেছে। তদন্তকারীদের একটি সূত্রের দাবি, সইফুদ্দিন খুনে তাঁর বাড়ির লোকও জড়িত রয়েছেন।
উল্লেখ্য, সোমবার ভোরে বাড়ির কাছেই মসজিদে নমাজ পড়তে যাওয়ার সময় খুন হন সইফুদ্দিন। পালানোর পথে জনতার হাতে ধরা পড়ে যান দু’জন। শাহাবুদ্দিন নামে এক জনের মৃত্যু হয় গণপ্রহারে। শাহারুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তৃণমূল নেতার খুনের অব্যবহিত পর নিকটবর্তী দলুয়াখাকি গ্রামে আনিসুর-সহ সিপিএমের কিছু কর্মী-সমর্থকের বাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন ধরানো হয়। সইফুদ্দিনের পরিবারের তরফে আনিসুরের নামে খুনের অভিযোগ দায়ের হয় থানায়। বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি জানান, আনিসুর এবং কামালউদ্দিন খুনে জড়িত ছিল বলে প্রমাণ মিলেছে।