পেট্রাপোল সীমান্তে থমকে ট্রাক। নিজস্ব চিত্র।
বাংলাদেশে অশান্তির জেরে এ দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর পেট্রাপোল দিয়ে সোমবারেও সীমান্ত-বাণিজ্য কার্যত বন্ধ থাকল। এই নিয়ে তিন দিন ধরে ওই বন্দরে অচলাবস্থা চলছে। ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। সীমান্ত-বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত লোকজন জানান, পেট্রাপোলে ৮১২টি ভারতীয় ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে বেনাপোলে যাওয়ার জন্য।
পেট্রাপোল বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দেশ থেকে পণ্য নিয়ে ট্রাক বাংলাদেশের বেনাপোলে ঢুকলে তার ‘অনলাইন এন্ট্রি’ করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে ইন্টারনেট পরিষেবা যে হেতু বন্ধ, তাই তা হচ্ছে না। সে কারণেই এ দেশ থেকে পণ্য নিয়ে ট্রাক বেনাপোলে যেতে পারছে না। কিন্তু পচনশীল পণ্য বাংলাদেশ ‘ম্যানুয়াল’ ব্যবস্থায় নিচ্ছে। এ দিনই পেট্রাপোল ও বেনাপোলে কিছু পচনশীল পণ্যের (মাছ, পেঁয়াজ, লঙ্কা, রসুন ইত্যাদি) ট্রাক আসা-যাওয়া করেছে বলে জানিয়েছেন ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া-র পেট্রাপোলের ম্যানেজার কমলেশ সাইনি।
সোমবার পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্তের জ়িরো পয়েন্টে বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত দু’দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে মিটিং ডেকেছিলেন এখানকার সীমান্ত-বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত লোকজনের সংগঠন ‘ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী। বেনাপোলের ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি শামসুর রহমানের কাছে কার্তিক দাবি জানান, পচনশীল পণ্য বাংলাদেশ যেমন ‘ম্যানুয়াল’ ব্যবস্থায় নিচ্ছে, একই ভাবে সাধারণ পণ্যও সে ভাবে নেওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য। এর সঙ্গে, বেনাপোলে আটকে থাকা প্রায় ৩০০ ভারতীয় ট্রাকের পণ্য দ্রুত খালি করে ট্রাকগুলি ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করার দাবিও জানিয়েছেন কার্তিক।
কার্তিক বলেন, ‘‘শামসুর সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন। বেনাপোলে আটকে থাকা ভারতীয় ট্রাকচালক ও খালাসিরা দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন। খাওয়া-দাওয়ার অসুবিধা হচ্ছে অবাঙালি চালকদের। ‘‘তিন দিনে কয়েকশো কোটি বৈদেশিক মুদ্রা আয় থেকে আমরা বঞ্চিত হয়েছি।’’
বন্দর সূত্রের খবর, স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে দিনে ৩৫০ বা তার বেশি ট্রাক পণ্য নিয়ে বেনাপোলে যায়। ও দেশ থেকে দু’শোর বেশি ট্রাক পণ্য নিয়ে পেট্রাপোলে আসে। প্রতি মাসে পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে পণ্য রফতানি হয় দুই থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকার। সবই কার্যত স্তব্ধ। সিডব্লুসির (সেন্ট্রাল ওয়্যারহাউস কর্পোরেশন) পার্কিংয়ে ট্রাক দাঁড়ালে দৈনিক ব্যবসায়ীদের সরকারকে নির্দিষ্ট টাকা (ডিটেনশন চার্জ) দিতে হয়। এ ভাবে দিনের পর দিন দাঁড়িয়ে থাকলে ‘ডিটেনশন চার্জ’ বাড়তে থাকবে। ব্যবসায়ীরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।