ফাইল চিত্র
গঙ্গাসাগর মেলার জন্য এ বছর মোবাইল অ্যাপ তৈরি করেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদ। ভিড় সামাল দেওয়া, যাত্রীদের নিরাপত্তা তো বটেই, যাত্রীরা ওই অ্যাপ থেকে মেলার খুঁটিনাটি তথ্যও জানতে পারবেন।
সাধারণ যাত্রীরা যেমন অ্যাপ ব্যবহার করবেন, মেলায় নজরদারির জন্য প্রশাসন এ বার একটি বিশেষ সফটওয়্যার ব্যবহার করবে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক পি উলগানাথন। ‘সাগর সুরক্ষা’ নামের ওই সফটওয়্যারের সাহায্যে মেলার রিয়েল টাইম পরিস্থিতি জানা যাবে। তীর্থযাত্রীদের ভিড় থেকে শুরু মেলার সেই মুহূর্তের হাতেগরম পরিস্থিতি জানা যাবে ওই সফটওয়্যারের মাধ্যমে। মেলায় ব্যবহৃত সব যানবাহনে জিপিএস ট্র্যাকার। তার ফলে যানবাহনের অবস্থান যেমন জানা যাবে, তেমন অহেতুক যান-জটও ঠেকানো যাবে বলে মনে করছে জেলা প্রশাসন।
জেলাশাসক পি উলগানাথন জানিয়েছেন, ‘রিয়েল টাইম মনিটরিং সিস্টেম’ সফটওয়্যার সাগর সুরক্ষায় থাকবে ‘ওভার ক্রাউড অ্যালার্ট’, ‘ট্রেসপাসিং অ্যালার্ট’, ‘ক্রাউড গ্যাদারিং অ্যালার্ট’ এবং ‘স্মোক অ্যালার্ট’। যার মাধ্যমে প্রশাসনের নখদর্পণে থাকবে মেলাপ্রাঙ্গণে এবং যাতায়াতের পথে জেটিগুলিতে পূণ্যার্থীদের অতিরিক্ত ভিড় রয়েছে কিনা এবং কোথাও কোনও অবৈধ প্রবেশ ঘটছে বা ঘটেছে কিনা।
জেলা প্রশাসন মনে করছে, এর ফলে বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটার আগেই সতর্ক হতে পারবে প্রশাসন। কোথাও কোনও আগুন লাগার ঘটনা ঘটলেও সে সম্পর্কে প্রশাসনকে সতর্ক করবে 'সাগর সুরক্ষা'। এর আগে গঙ্গাসাগর মেলায় পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
মেলা প্রাঙ্গণে ভিড় নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক যাঁরা থাকবেন, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তৈরি করা হচ্ছে একটি মোবাইল অ্যাপও। গঙ্গাসাগরের যাত্রীদের সুরক্ষার জন্য সাহায্য নেওয়া হবে ‘স্মার্ট মনিটরিং টেকনোলজির’। যার মাধ্যমে সমগ্র মেলাপ্রাঙ্গণে নজর রাখবে প্রশাসন। শুধু তাই নয় ‘অতিথি পথ’ নামে আরও একটি মোবাইল অ্যাপ তৈরি হচ্ছে। যার মাধ্যমে মেলা সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য পাওয়া যাবে। সকলেই গুগল প্লে স্টোর থেকে এই অ্যাপ ডাউনলোড করতে পারবেন। এই অযাপ তেকে জানা যাবে কপিল মুনির মন্দিরে পুজোর যাবতীয় তথ্য। ডানা যাবে জোয়ার-ভাটার সময়, যানবাহন ও ফেরির ভাড়া ও সময় সংক্রান্ত নানা তথ্য। মেলা প্রাঙ্গণে আসার পথনির্দেশও এই অ্যাপের মাধ্যমে জানা যাবে। গঙ্গাসাগর ওয়েবসাইট ও সোশ্যাল মিডিয়ার পেজ সম্পর্কেও জানা যাবে অ্যাপটির মাধ্যমে।
অ্যাপটি ব্যবহারের সময় ব্যবহারকারীর সেই সময়ের ভৌগোলিক অবস্থান জানতে পারবে প্রশাসন। যার ফলে ওই অ্যাপ ব্যবহারকারীর কোনও বিপদ বা অসুবিধা হলে তাঁকে খুঁজতে সময় ব্যয় অনেক কম হবে।
জেলাশাসক আরও জানান, মেলায় থাকছে ‘বাহন ট্র্যাকার’। অর্থাৎ, মেলা চলাকালীন সমস্ত গাড়ির অবস্থান প্রশাসনের কাছে থাকবে।
মেলার কাজে যুক্ত থাকা বাস ও ফেরি বা অন্যান্য যানবাহন কোথাও অযথা দাঁড়িয়ে থাকলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে পারবে পুলিশ। তার জন্য মেলায় যুক্ত সব গাড়িতে জিপিএস যন্ত্র বসানো হবে।