প্রতীকী ছবি।
একাধিক খুন ও ডাকাতির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ভারত ও বাংলাদেশে ‘লুক আউট’ নোটিস জারি হয়েছিল। দাগি সেই দুষ্কৃতীকে শুক্রবার সন্ধ্যায় বসিরহাটের ঘোজাডাঙা সীমান্ত থেকে ধরল বসিরহাট পুলিশ। কেরল পুলিশও বেশ কিছু দিন ধরে ইলিয়াসকে খুঁজছিল। তার বিরুদ্ধে কেরলের একটি সংবাদপত্রের সম্পাদকের বাড়িতে ২০ লক্ষ টাকা ডাকাতির অভিযোগ আছে। কেরল পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে বসিরহাট পুলিশ। বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপার কঙ্করপ্রসাদ বাড়ুই বলেন, ‘‘দেশের একাধিক রাজ্যে অপরাধের বেশ কয়েকটি অভিযোগ আছে ওই যুবকের বিরুদ্ধে।’’ শনিবার বসিরহাট এসিজেএম আদালতে তোলা হয় ইলিয়াসকে। বিচারকের নির্দেশে কেরল পুলিশ তাকে ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়ে গিয়েছে। ইলিয়াসের সঙ্গে বড় কোনও দুষ্কৃতী চক্রের যোগ আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ গ্রামে বাড়ি ইলিয়াসের। তার বিরুদ্ধে সে দেশের এক রাজনৈতিক নেতাকে খুন-সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। ২০১৮ সালের অগস্ট মাসে বৈধ পাসপোর্ট নিয়েই বাংলাদেশ থেকে ঘোজাডাঙা হয়ে ভারতে ঢোকে ইলিয়াস। সেখান থেকে বছর বত্রিশের ওই যুবক কেরলে পাড়ি দেয়। সেখানেও শুরু করে নানা অপরাধ। কেরল, কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ, ভোপাল-সহ একাধিক রাজ্যে তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি ডাকাতি এবং খুনের অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে বসিরহাট জেলা পুলিশ। কেরলের কন্নড সিটি থানার পুলিশ জানায়, সে রাজ্যে ইলিয়াসের বিরুদ্ধে ৭টি ডাকাতি এবং খুনের অভিযোগ আছে। কর্ণাটকের হাবেলি থানার পুলিশও তাকে খুঁজছে। সেখানেও খুনের অভিযোগ আছে।
২০১৮ সালের শেষের দিকে কেরলের ওই সংবাদপত্রের সম্পাদক বিনোদ চন্দনের বাড়িতে ডাকাতি হয়। দুষ্কৃতীরা বাড়ির লোকজনকে মারধর করে ২০ লক্ষ টাকা নিয়ে চম্পট দেয়। তদন্তে নেমে উঠে আসে ইলিয়াসের নাম। কেরল পুলিশ সূত্রের খবর, ‘‘বাংলাদেশে খুন করে পালিয়ে আসার পরে এ দেশের বিভিন্ন শহরে গিয়ে সেখানকার স্থানীয় দুষ্কৃতীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছিল ইলিয়াস। তাকে ধরতে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। পাসপোর্ট দেখিয়ে যাতে দেশ ছাড়তে না পারে, সে জন্য লুক আউট নোটিসও জারি করেছিল কেরল সরকার। সম্প্রতি কেরলের এক দুষ্কৃতীকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, বসিরহাট সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পিঠটান দেওয়ার চেষ্টায় আছে ইলিয়াস।
পুলিশ জানায়, এ দিন সন্ধ্যায় বসিরহাটের ঘোজাডাঙা দিয়ে বাংলাদেশে যাওয়ার জন্য ইলিয়াস পাসপোর্ট দেখালে সন্দেহ হয় ওসি ইমিগ্রেশন (আইসিপি) প্রশান্ত ঘোষের। কম্পিউটারের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, ওই পাসপোর্ট মালিকের নামে লুক আউট নোটিস জারি হয়েছে। তিনি ইলিয়াসকে বসিয়ে রেখে বসিরহাট থানায় খবর দেন। পুলিশ গিয়ে ইলিয়াসকে ধরে। তবে ইলিয়াসের দাবি, তার তিন সন্তান এবং স্ত্রী মোমেনা বাংলাদেশের গ্রামে থাকে। সে ভারতে এসেছিল অজমেঢ় যাবে বলে। কিন্তু কেন সে জন্য দু’বছর ভারতে কাটিয়ে দিল, তার সদুত্তর দিতে পারেনি ইলিয়াস। নিজের রোজগারের উৎস সম্পর্কেও জানাতে পারেনি বলে দাবি বসিরহাট জেলা পুলিশের।