গোবিন্দ রাওসাহিব মুন্ডে
বিস্তর কাঠখড় পোড়ানোর পরে ফের খোঁজ মিলল নাসিকের যুবকের।
গঙ্গাসাগর মেলার মাসখানেক পরে রাস্তার ধারে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। হ্যাম রেডিয়ো ক্লাব বাড়ি খুঁজে বের করে। কিন্তু বাড়ির লোকেরা তাঁকে নিতে আসার আগেই ফের নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের নাসিকের বাসিন্দা যুবক। আট মাস পরে কাকদ্বীপে খোঁজ মিলেছে মানসিক ভারসাম্যহীন গোবিন্দ রাওসাহিব মুন্ডের। পরিবারের সদস্যেরা তাঁকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য মহারাষ্ট্র থেকে রওনা দিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগেও একাধিকবার বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন গোবিন্দ। এ বছর গঙ্গাসাগর মেলার কিছু দিন পরে ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিয়ো ক্লাবের সদস্য দিবস মণ্ডল তাঁকে সাগরদ্বীপের একটি গ্রামে রাস্তার ধারে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। রুদ্রনগর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে দু’দিন থাকার পরে পালিয়ে যান গোবিন্দ। পরে ফের তাঁকে উদ্ধার করা হয়।
সে সময়ে হাসপাতালে পুলিশ পুলিশ প্রহরায় রাখা হয়েছিল তাঁকে।
কথা বলে যুবকের বাড়ির পাশের একটি স্কুলের নাম জানা যায়। সেই সূত্র ধরে নাসিকে গোবিন্দর পরিবারকে খুঁজে বের করে হ্যাম রেডিয়ো ক্লাব। খবর যায় পরিবারের লোকজনের কাছে। ছেলেকে বাড়ি ফেরানোর জন্য ট্রেনে করে রওনা হন তাঁর বাবা-মা।
খড়গপুর পার হওয়ার পরে ট্রেনে তাঁদের মোবাইল ও টাকা চুরি হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে হ্যাম রেডিয়ো ক্লাবের সম্পাদক অম্বরীশ নাগ বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় পরিবারটির। সে সময়ে ওই যুবককে রাখার দায়িত্ব নেয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
অভিযোগ, কিছু দিন পরে সেখান থেকেও পালিয়ে যান গোবিন্দ। ইতিমধ্যে গোবিন্দর আত্মীয়েরা ফের অম্বরীশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁরা গোবিন্দকে নিতে আসতে চাইছিলেন। তখনই ওই সংস্থার কর্তা জানান, তিনি গোবিন্দকে ট্রেনে তুলে দিয়েছেন। পরিবারের লোকজন সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপারের দ্বারস্থ হন। পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ওই সংস্থার কর্ণধারের পাশাপাশি পুলিশ অম্বরীশের বয়ান নেয়।
এরই মধ্যে হ্যাম রেডিয়ো ক্লাবের সদস্য, কাকদ্বীপের বাসিন্দা সমরেন্দ্রশেখর রায় দিন দু’য়েক আগে কাকদ্বীপের ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর কালনাগিনী সেতুর মোড়ের কাছে গোবিন্দকে দেখতে পান। অম্বরীশের কাছে তাঁর ছবি পাঠানোর পরে পরিবারকে পাঠানো হয়। তাঁরা শনাক্ত করেন।
সোমবার কাকদ্বীপ থানার সহযোগিতায় গোবিন্দকে ফের থানায় আনা হয়। আপাতত সেখানেই রয়েছেন তিনি। খবর পাওয়ার পরে গাড়িতে করে নাসিক থেকে রওনা হয়েছেন তাঁর পরিজনেরা। তাঁদের সঙ্গে এ বার মহারাষ্ট্র পুলিশের এক কর্মী রয়েছেন। পুলিশ অবশ্য দাবি করেছে, তারাই গোবিন্দকে খুঁজে পেয়েছে। যদিও পুলিশের কাছে ওই যুবকের বাড়ির ঠিকানা ছিল না বলে দাবি হ্যাম রোডিয়ো ক্লাবের।